শিবলী রহমান শিপু, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: একসময় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে আতঙ্কের নাম ছিল “চরমপন্থী”। গুম, খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটতো হরহামেশাই। প্রায় প্রতিদিনই এসব এলাকায় ঝরত তাজা রক্ত। এ সাত জেলার চরমপন্থীরা অন্ধকার জগৎ থেকে আলোয় ফিরতে আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিলে সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে র্যাব-১২।
রবিবার(২১ মে) সকাল সাড়ে ১১ টায় সিরাজগঞ্জে র্যাব-১২ এর সদর দপ্তরে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল), সর্বহারাসহ মোট চারটি চরমপন্থী দলের ৩১৫ জন সদস্য র্যাব-১২ এর মধ্যস্থতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং ২১৯ টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রচুর গোলাবারুদ ও দেশীয় অস্র জমা দেন।
আত্মসমর্পণ উপলক্ষে র্যাব-১২ এর সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে এ জন্য র্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর আগেও র্যাব সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত করেছে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। আজকে আবারও চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণের মধ্যমে র্যাব প্রমাণ করলো তারা জনগণের সাথে কাজ করে। মানুষের জন্য কাজ করে।
বিশেষ এ অনুষ্ঠানে র্যাব ফোর্সেসের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ করা ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে র্যাব। অপরাধের জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে র্যাব ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে আজকে এই ৩১৫ জন চরমপন্থী সদস্য আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করলো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব বেনজীর আহমেদ (এমপি), সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল আজিজ, সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার) পিপিএম, ঢাকা এবং রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি, অধিনায়ক-র্যাব ১২, জেলা প্রশাসক- সিরাজগঞ্জ, পুলিশ সুপার- সিরাজগঞ্জসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসায় খুশি তাদের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী। আতঙ্ক কেটে জনমনে বিরাজ করছে স্বস্তি।