পাঁচ দফা দাবিতে বুধবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে ছয়টি নিবন্ধিত সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
কয়েকদিন ধরেই পাঁচ দফা দাবিতে নগরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনটি। দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতিরও হুমকি দিয়ে আসছেন সংগঠনের নেতারা। নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে দাবিগুলো পূরণ না হওয়া মঙ্গলবার থেকে সিলেট জেলায় ও বুধবার থেকে সিলেট বিভাগে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে এই সংগঠন।
এব্যাপারে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা ন্যায্য পাঁচটি দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে নানা টালবাহানা করা হচ্ছে। আমাদের একটি দাবিও আজ পর্যন্ত মানা হয়নি।
তিনি বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর আমরা এই দাবিগুলো জানিয়ে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে মানববন্ধন করেছি এবং গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি। স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেটের প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল সেক্টরেও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এরপরও আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেয়ায় আমরা এ কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
মঙ্গলবার ভোর থেকে সিলেট জেলার রাস্তায় কোনো চালক গাড়ি নিয়ে বের হবেন না জানিয়ে রাজন বলেন, বুধবার থেকে পুরো সিলেট বিভাগে কোনো গাড়ি চলবে না। আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিবহন শ্রমিকরাও। ফলে বুধবার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হবে।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ জানান, তাদের পাঁচটি দাবি হলো:
ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, রেকারিং বাণিজ্য ও মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা আদায় বন্ধ, মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার ও অতিরিক্ত উপকমিশনারকে প্রত্যাহার;
গাড়ি ফিটনেস মামলা সঠিকভাবে করা, সিলেট শ্রম আদালতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে হয়রানি বন্ধ এবং আদালত থেকে শ্রমিক প্রতিনিধি নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার;
হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হবে;
সিলেটের সব ভাঙা সড়ক সংস্কার এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ করতে হবে। অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ডাম্পিং করা গাড়ি এবং অন্য জেলা থেকে আগত গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
এদিকে, কর্মবিরতির ঘোষণা জানিয়ে সোমবার সিলেটে মাইকিংও করেন পরিবহন শ্রমিকরা।