নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে সোনাইমুড়ী থানার ওসি সহ চার পুলিশ সদস্য এবং বিএনপি-আওয়ামী লীগ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার সবুজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেদওয়ানুল ভূঁইয়া ও চাষীরহাট ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. হানিফ এর অবস্থা গুরুতর।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সোনাইমুড়ী-ছাতারপাইয়া, সড়ক-সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক ও বাইপাসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আফম বাবুল (বাবু চেয়ারম্যান) ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক দিলদার হোসেন নোবেলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল ছাতারপাইয়া সড়ক থেকে শুরু হয়। মিছিলটি সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়কের মাথায় পৌঁছালে বিএনপির লোকজন মিছিলে অতর্কিত হামলা করে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আফম বাবুল দাবি করেন, ‘বিএনপি সমাবশের নামে নাশকতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রতিরোধের মুখে তারা কোনো সমাবেশ করতে না পেরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল দিয়ে হামলা চালিয়েছে।’
এদিকে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, জালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, দেশব্যাপী তীব্র লোডশেডিং এবং ভোলা জেলায় ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আব্দুর রহিম পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সোনাইমুড়ী উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে সোনাইমুড়ী পৌর সদরের সিটি সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির স্থলের আশপাশ এলাকায় গত ২-৩ দিন থেকে সরকার দলীয় লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে আমাদের সমাবেশ শুরু হলে তারা অতর্কিত হামলা চালায়।’ এতে তার দলের ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন। এ ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তিনি হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানান।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক দিলদার হোসেন বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিএনপির লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির কর্মীরা ইটের টুকরা নিয়ে আমাদের মিছিলে হামলা চালায়। ইটের আঘাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার সবুজ, মো. হানিফ ও ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর আহত হন।’
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সোনাইমুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে একটি সমাবেশ ডাকা হয়। কিন্তু তারা সমাবেশ স্থলে কোনো মঞ্চ, চেয়ার আনেনি। হঠাৎ করে তারা এক দিক থেকে চৌরাস্তা এলাকায় একত্রিত হয়। এ সময় পুলিশ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। এমন সময় হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’