হিজাব পরতে বাধ্য করলে প্রতিবাদ করবো বলে মন্তব্য করেছেন নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মালালা ইউসুফজাই। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মারা যান ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনি। এরপরই ইরানের শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ।
মাহশার মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোসহ বিশ্বের অধিকারকর্মীরা প্রতিবাদ জানচ্ছেন। হিজাববিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে নিজের মত দিয়েছেন মালালা ইউজুফজাই।
ইরানে চলমান এ বিক্ষোভে সম্মতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে মালালা লিখেছেন, একজন নারী যাই পরুক না কেন, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমি আগেই বলেছি, যদি কেউ আমাকে আমার মাথা ঢেকে রাখতে বাধ্য করে, আমি প্রতিবাদ করবো। যদি কেউ আমাকে আমার স্কার্ফ খুলতে বাধ্য করে, তাহলেও আমি প্রতিবাদ করবো।
ভারতের কর্নাটকে হিজাব বিতর্কের সময় জোরপূর্বক হিজাব পরতে না দেওয়ারও বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন মালালা। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘হিজাব পরার কারণে মেয়েদের স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বেশি কাপড় বা কম কাপড় – যেকোন অছিলাতেই নারীদের পণ্য বানানোর প্রবণতা চলছেই।’
ইরানের চলমান টানা ৯দিনের এ বিক্ষোভ এ মুহূর্তে অন্তত ৫০ টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত নিহতের তথ্য জানা গেছে।
শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ দেশটিকে বহু বছরের মধ্যে এবার মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
পুলিশ দাবি করছে, হিজাব সম্পর্কিত নিয়ম ভঙ্গ করে মাহাসা আমিনি। এরপরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার মৃত্যু হয়েছে স্বাস্থ্যগত কারণে। এদিকে পরিবার প্রত্যক্ষদর্শী এবং বহু ইরানির দাবি, পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে মাহশার।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, তারা যদি এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ান তাহলে একদিন তাদেরও একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের এলিট রাজনীতিকদের দুর্নীতি, ৫০ শতাংশের বেশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে দারিদ্র বেড়ে যাওয়া, পারমাণবিক আলোচনায় অচলাবস্থা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাব তরুণদেরসহ একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে হতাশ করে তুলেছে।
সবমিলিয়ে ভঙ্গুর অবস্থা সামলানোর পাশাপাশি বিক্ষোভ সামলাতে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে ইরানকে।