গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতির পর যুক্তরাষ্ট্রসহ ১১টি দেশ এবং ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সতর্ক করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দেওয়া ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানদের ডাকা হয়েছিল। তাদের আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা না বলতে আহ্বান জানিয়েছি। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সচেতন থাকতেও তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে বিষয়টিকে তিনি ‘তলব’ বলতে চাননি। প্রতিমন্ত্রী ভাষ্য, ‘তাদের তলব করা হয়নি। আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানদের দেয়া বিবৃতি ভিয়েনা কনভেনশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেকোনো ইস্যুতে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে জানাতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে ১৩টি মিশনের পররাষ্ট্র দফতরেও চিঠি পাঠানো হবে।
তবে রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানরা বলছেন, নির্বাচনে সহযোগিতামূলক আচরণের ভিত্তিতেই তারা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এতে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।
গত ১৭ জুলাই বনানীর একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে মারধর করে কিছু তরুণ। পরদিন এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
পরে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১১টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়। দেশগুলো হলো- কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ডেলিগেশন।
বিবৃতির জেরে ২০ জুলাই ঢাকায় জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ জানায় সরকার।
সরকার প্রত্যাশা করে–ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘ যেন প্রকাশ্যে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে।