আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সাত সংসদ সদস্যকে পদত্যাগের বুদ্ধি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা অচিরেই পস্তাবেন। বিএনপির সাতজন (সংসদ সদস্য) হলেন সিন্ধুর মধ্যে বিন্দু। এই বুদ্ধি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা অচিরেই পস্তাবেন। এটা ঠিক নয়। লাভ হলো কী? সরকরের পতন হলো? মানুষের যখন পতন আসে তখন ইচ্ছার বিরুদ্ধেও ভুল করে।
রবিবার(১১ ডিসেম্বর) বিকেলে মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমনটা জানান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্যের পদত্যাগে সংসদ অচল হবে না। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এখন ৩০১ জন, প্রয়োজন ১৫১ জন। তারপর ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা, তরীকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি আছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ও গণফোরামও আছে। তারা তো পদত্যাগ করেনি।
বিএনপির আমলে পকেটের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি। শেখ হাসিনার আমলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আমরা ঘুরে দাঁড়াব। মানুষ একটা কষ্টে আছে, ধৈর্য ধরেছে। তবে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি।
সম্মেলনে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগকে ফেলে দিলেন না? পল্টনে সমাবেশ করলেন না? পারলেন না? আমি কিন্তু দুদিন আগে বলেছি, সমঝোতা হবে। আমাদের আকাশে কালো মেঘ কেটে যাবে। ১০ ডিসেম্বর আতঙ্ক দূর হয়েছে। মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। এটাকে ধাক্কা দিয়ে কেউ ফেলে দিতে পারবে না, ১০ ই ডিসেম্বর তা আবার প্রমাণ হয়ে গেছে।
বিএনপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নোংরা ভাষায় কথা বলবেন না। নোংরা ভাষা যদি আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয় তখন কিন্তু পালাবেন। আমরা কিন্তু নোংরা কথা বলিনি। আমরা বেগম খালেদা জিয়া— এই বলি, হাসিনা হাসিনা বলে বেয়াদবের মতো কথা বলি না। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া বলে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওই ভাষা ব্যবহার করেন। নোংরা কথা বললে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। কারা কারা নোংরা কথা বলছেন, সব নোট আছে।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ইস্যুতে ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশের ওপর যখন হামলা হয়, যখন পুলিশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন মানবাধিকার কোথায় থাকে? কিসের মানবাধিকার! যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন নারী ধর্ষণ হচ্ছে, তখন কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনে খবর প্রকাশিত হয়েছে এক বছরে কত নারী ধর্ষিত হয়েছে। একটি স্কুলের ১৯ জন শিশুকে এক দিনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তখন মানবাধিকার কোথায় যায়? ফিলিস্তিনে প্রতিদিন কত রক্ত ঝরেছে! আপনারা কিছু করতে পেরেছেন?
জাতিসংঘ এত বড় বড় কথা বলে, জাতিসংঘ কি ফিলিস্তিনে হত্যা বন্ধ করতে পেরেছে? এমন প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ করতে পেরেছে? নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের কষ্টে, বিপদে ফেলেছে। আমরা গরিব দেশ, উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মতো সৎ ও আদর্শবান নেতা পেয়েছি বলেই সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছি। উন্নত দেশে অর্থ দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হয়েছে, আর আমাদের দেশে বিনা পয়সায় শেখ হাসিনা জনগণকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন।
বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।অর্জনে ও উন্নয়নে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। ’৭৫-এর পর এ দেশে তাঁর মতো সৎ নেতা আর আসেননি।
বিএনপির আমলে পকেটের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার ভাষ্য, শেখ হাসিনার আমলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আমরা ঘুরে দাঁড়াব। মানুষ একটা কষ্টে আছে, ধৈর্য ধরেছে। তবে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। খাদ্য আমাদের আছে। খাদ্য মজুত আছে। কৃষি আমাদের ভালো আছে।
মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম প্রমুখ।