দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে প্রয়োজনে সারাদেশের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : গণমাধ্যমের ভূমিকা, জাতির প্রত্যাশা’ শিরোনামে আয়োজিত সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে প্রয়োজনে পুরো দেশের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। ভোট যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা প্রয়োজন।
আমি এখনো ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি নির্বাচনী পরিবেশটা পুরোপুরি অনূকূলে নেই এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে এর অর্থ এই নয় যে, নির্বাচন করব না। আমি নৌকা চালাই স্রোতের অনুকূলে। আমাকে নৌকা চালাতে হবে, সেটা প্রতিকূলে হলেও চালাতে হবে।
সকালে গণমাধ্যম সম্পাদকদের সঙ্গে এক কর্মশালার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সিইসি বলেন, কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা নিরসনে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। আমাদের প্রত্যাশা প্রথম থেকেই ছিল। কিন্তু এখনো নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশটুকু তৈরি হয়ে ওঠেনি। আমাদের বিষয়টা হচ্ছে, আমরা যেটা চাই, আন্তরিক যে পরিবেশ সেটা অনুকূল হয়ে উঠুক। এজন্য সবাইকে নিরন্তর আহ্বান করে যাচ্ছি, সংলাপ করছি।
‘যারা নির্বাচনে আসতে চান না তাদের আমার পক্ষ থেকে আধা সরকারিপত্র দিয়েছি। কিন্তু সাড়া পাইনি’, জানান সিইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে পারে। আমরা তার মধ্যে অনধিকার চর্চা করব না।
আজ গণমাধ্যমের সম্পাদকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করে ইসি। এতে অতিথিদের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে একটি ধারণাপত্রও পাঠিয়েছিল সিইসি।
এতে বলা হয়েছে, ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে সরকার ও কমিশনের বিষয়ে কতিপয় রাজনৈতিক দলের গণমাধ্যমে প্রচারিত অনাস্থা কাটিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণের আস্থা অর্জনের প্রয়াস আমরা অব্যাহত রেখেছি। তবে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যে অনুকূল পরিবেশ প্রত্যাশা করা হয়েছিল সেটি এখনো হয়ে ওঠেনি।’
এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমি নিজেই লিখতে পারি, নিজেই টাইপ করতে পারি। সেজন্য হয়তো কিছু ভুলভ্রান্তি হতে পারে। ওখানে যে কথাটা বলেছি তা খুব আন্তরিকভাবে বলেছি। প্রথম যেদিন দায়িত্ব নিলাম সেদিন থেকেই বলতে দেখছি, আপনারা কি পারবেন-আপনারা কি পারবেন? এটা হয়েছে, সেটা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। ফিল্ডটা যে খুব মসৃণ তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু কাঁটা আছে। সেজন্য আমরা আবেদন করেছি।
তিনি বলেন, আপনারা চেষ্টা চালিয়ে যান পরিবেশ যাতে আরও অনুকূল হয়ে ওঠে। ভাষাটা হয়তো আর্টিকুলেশন রং হয়ে গেছে। আমি এখনও ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, পরিবেশটা পুরোপুরি অনুকূলে নেই। তবে এর অর্থ এই নয় যে নির্বাচন করব না। আমি নৌকা চালাই স্রোতের অনুকূলে। আমাকে নৌকা চালাতে হবে, সেটা প্রতিকূলে হলেও চালাতে হবে।