অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি এবং মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরের বাসিন্দা জাকির হোসেন এক যুগ পালিয়ে থাকার পর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পলাতক এ ১২ বছরে তিনি নানা পেশা পরিবর্তনের পাশাপাশি বাউল গানের দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার(৫ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাকিরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকার অদূরে সাভারের শাহিবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি এক যুগ ধরে পলাতক ছিলেন।
র্যাব জানায়, ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিপা আক্তার ও ৩ বছর বয়সী কন্যা জ্যোতি আক্তারকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জাকির। স্ত্রী-সন্তান খুন করে তিনি পালিয়ে যান। পরে ধরা পড়েন। ২০১০ সালে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পলাতক জাকিরকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জাকির একাধিকবার পেশা পরিবর্তন করেন জানিয়ে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, তিনি গার্মেন্ট, স্পাইরাল বাইন্ডিং ও ঝুটের ব্যবসা করেন। একপর্যায়ে তিনি ছদ্মবেশ নিয়ে বাউল গানের দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। ২০১৩ সালে তিনি আবার বিয়ে করেন। এই সংসারে তাঁর দুই মেয়েসন্তান আছে।
জাকিরের হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনা তুলে ধরে র্যাব জানায়, ২০০০ সালে জাকিরের সঙ্গে নিপার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক নিলেও বিয়ের পর আরও যৌতুকের জন্য নিপাকে নির্যাতন করেন জাকির। বিয়ের দুই বছর পর তাঁদের কন্যাসন্তান হয়। ২০০৫ সালে নিপা আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। এ সময় তিনি জানতে পারেন, অপর এক নারীর সঙ্গে জাকিরের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কলহ হয়। এই কলহের জেরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করেন জাকির।