ভারতের কর্নাটক রাজ্যে হিজাব ইস্যুতে বিতর্ক দেশটির নিজস্ব গন্ডি পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশেও আলোচনার জন্ম দেয়। এবার এ নিয়ে বড় ঘোষণা দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া।
তিনি বলেছেন, মুসলিম নারীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে শিগগিরই। নারীরা যা খুশি তাই পরতে পারবেন।
শুক্রবার তিনি এ ঘোষণা দেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তার রাজ্যে হিজাব নিষিদ্ধ করার কোনো কার্যকারিতা নেই। আর কোনো হিজাব নিষেধাজ্ঞা নেই। নারীরা হিজাব পরতে পারবেন এবং যেকোন স্থানে যেতে পারবেন। আমি হিজাব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আপনি কি পোশাক পরবেন এবং কি খাবার খাবেন, সেটা একান্তই আপনার পছন্দ। আমি কেন আপনাকে তাতে বাধা দেবো? মহিসূরে এক জনসমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
সিদ্ধারামাইয়া বলেন, আপনার যা খুশি খান। আমার যা খুশি আমি তাই খাবো। আমি ধুতি পরি। আপনি শার্ট-প্যান্ট পরেন। তাতে অন্যায় কি?
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বিজেপি সরকারের অধীনে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বি বোমাই। তার সরকার রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাথা ঢেকে রাখা অর্থাৎ হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে। এতে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়।
ওই সময় এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন অনেক শিক্ষার্থী। কিন্তু কর্নাটক হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। তারা বলে, হিজাব পরা ইসলাম ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় কোনো রীতি নয়। শিক্ষার্থীরা কি পোশাক পরবে সে সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বিষয়টি তারপর সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখানে বিচারকরা বিভক্ত রায় দেন। একজন বিচারক তার রায়ে বলেন, স্কুল ও অন্য স্থানগুলোতে ইউনিফর্ম বা নির্ধারিত পোশাক অনুমোদনের কর্তৃত্ব রাজ্যের।
এরপর জুন মাসের ভোটে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। কর্নাটকের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্কা খার্গে বলেছেন, বিজেপি সরকারের সময়ে যেসব আইন করা হয়েছে যদি দেখা যায় তা দমনমূলক তাহলে রাজ্যের নতুন সরকার তা বাতিল করবে।
তিনি জানান, কর্নাটকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করে এমন যেকোনো নিষ্পেষণমূলক পলিসি, যা রাজ্যকে পিছন দিকে নিয়ে যাবে তা পর্যালোচনা করা হবে। প্রয়োজনে তা বাতিল করা হবে।