অর্থ বা ক্ষমতার জন্য আমি বিক্রি হতে পারি না মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) এমপি বলেছেন, আমি বিক্রি হয়ে যাবার মত মানুষ নই। ইউটিউবে কেউ একজন প্রচার করেছে আমি নাকি বিক্রি হয়ে গেছি। এই কথাটা আমাকে আহত করেছে।
তিনি বলেন, চাকরি জীবনে আমার অনেক পাওনাও গ্রহণ করিনি নীতির প্রশ্নে। চাকরি জীবনে আমার জন্য বরাদ্দের প্রয়োজনীয় অংশটুকু গ্রহণ করেছি। কোনো ট্যুরে আমার সাথে আমার পরিবার গেলে তাদের থাকা-খাওয়ার বিল আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করেছি। আমি একবার মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছি, আরেকবার মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করিনি। অর্থ বা ক্ষমতার জন্য আমি বিক্রি হতে পারি না।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে গণমাধ্যম কর্মীদের এসব কথা বলেন জিএম কাদের।
ভারত সফরে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমি আগেও বলেছি ভারত একটি শান্তিপূর্ণ এবং সুন্দর নির্বাচন চায়। তারা চায় নির্বাচনের আগে ও পরে যেনো কোনো সহিংসতা না হয়। কে ক্ষমতায় আসবে বা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে ভারতের কোনো বক্তব্য নেই। তারা মনে করে এসব বিষয় ঠিক করবে দেশের জনগণ, এগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার।
তিনি বলেন, ভারত চায়, বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে দ্বি-পক্ষীয় বিষয়গুলোতে যেনো কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো বিষয় আছে তাই তারা কখনোই চায় না বাংলাদেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ। আসলে জাতীয় পার্টির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয় নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে ভারত সরকারের সাথে।
ভারত সফর প্রসঙ্গে জিএম কাদের আরো বলেন, আমি বলতে চেয়েছি, দু’টি দেশের সরকার প্রধান বা যে কোনো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় যৌথ একটি বিবৃতি দেয়া হয়। দু’টি পক্ষ যেটুকু প্রকাশে সম্মত হবে, ততটুকুই প্রকাশ করা হয়। এর আগে এক একটি খসড়া করা হয়। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিদেশীদের সাথে বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে কথা বলি, তখন তারা জেনে নেন এই আলোচনার সংবাদ টুইট করা যাবে কিনা, ছবি দেয়া যাবে কি না বা আলোচনার কতটুকু প্রকাশ করা যাবে। আমরা সম্মতি দিলেই তারা টুইট করতে পারেন। আমরা গণমাধ্যমকে বলতে গেলেও তাদের সাথে আলোচনা করে নেই, এটাই বাস্তবতা। বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনি বলেই, ভারত সরকারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলিনি গণমাধ্যমকে আমরা কি বলবো বা কি বলবো না। তাই বিস্তারিত বলতে গেলে তাদের সাথে আলাপ করাটা হচ্ছে ভদ্রতা। অনেক সময় খোলামেলা আলোচনায় অনেক কথাই হতে পারে। একজন একটি কথা বলেছে, আমি হয়তো অন্যভাবে বুঝেছি। তখন তারা বলতে পারে আমি তো এইভাবে বলিনি। তাই এগুলো নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সেদিন স্পর্শকাতর বিষয় মনে করে কথা বলার সময় অনুমতি শব্দটি ব্যবহার না করে সম্মতি শব্দটি ব্যবহার করলে আরো ভালো হতো। আমি যেকোনো ব্যক্তির সাথে কথা বললে তাদের সম্মতি ছাড়া প্রকাশ করাটা ভদ্রতা মনে করি না, এমন একটি নিয়মও আছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমি আগেও গণমাধ্যমকে বলেছি, জাতীয় পার্টির প্রতি ভারত সরকারের আগ্রহ আছে। তারা মনে করে ভারতের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আছে, এবং তারা সেই সম্পর্ক বজায় রাখতে চাচ্ছে। তাদের বিশ্বাস জাতীয় পার্টি একটি সম্ভাবনাময় দল, জাতীয় পার্টি আগামীতে ভালো করতে পারবে। তারা আশা করে, ভারতের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো ভালো হবে এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরস্পরের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
জিএম কাদের বলেন, দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ঠেলাঠেলির মধ্যে হঠাৎ কথা বলায় ঠিকমত শব্দ চয়ন হয়নি, তাই কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এর কিছুটা সমালোচনাও হয়েছে। আমি ঠিক বোঝাতে পারিনি, এটা আমার ব্যার্থতা।