অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশটির প্রথম হিজাব পরা সিনেটর ফাতিমা পায়মানের অভিযোগকে ঘিরে। তিনি জানিয়েছেন, পার্লামেন্টের এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এক পুরুষ সহকর্মী তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছেন।
৩০ বছর বয়সী এই মুসলিম সিনেটর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এক সহকর্মী, যিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন, তাকে বলেন, তোমাকে একটু ওয়াইন খাওয়াই, তারপর দেখি তুমি কীভাবে টেবিলের ওপর নাচো। ফাতিমা সাথে সাথে কড়া জবাব দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ঘটনা সামনে আসতেই দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। অনেকে বলছেন, এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত হয়রানির ঘটনা নয়, বরং অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নারী প্রতিনিধিদের জন্য নিরাপত্তা ও সম্মানের অভাবের বহিঃপ্রকাশ।
ঘটনার দিনক্ষণ বা অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি, তবে বিষয়টি সামনে আসার পর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ ২০২১ সালের ব্রিটানি হিগিন্সের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন, যেখানে পার্লামেন্ট ভবনের মধ্যেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছিল।
আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আসা ফাতিমা পায়মান ২০২২ সালে সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে তিনি গাজা ইস্যুতে সরকারের অবস্থানের প্রতিবাদে লেবার পার্টি ত্যাগ করে স্বাধীন অবস্থানে যান।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি আরও জোরালো হয়েছে। বিশেষ করে নারী রাজনীতিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন অধিকারকর্মীরা।
ফাতিমা পায়মানের সাহসিকতা অনেকের কাছেই প্রশংসাযোগ্য হলেও, এখন প্রশ্ন উঠেছে—এই অভিযোগের তদন্ত কতটা স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে?