নাটোরের গুরুদাসপুরে ‘স্কুল বন্ধ রেখে’ শেষ হলো উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। গুরুদাসপুর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্কুলমাঠে সম্মেলন করার বিষয়ে জানতে পেরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল পরীক্ষা শেষে সম্মেলন করার নির্দেশ দেন। তার ওই নির্দেশের পরও স্কুল চলাকালীন সময়েই সম্মেলনের কাজ শুরু করা হয়।
মঙ্গলবার আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, কার্যনির্বাহী সদস্য রোকেয়া সুলতানা, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান প্রমুখ।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্মেল্পনকে কেন্দ্র করে গুরুদাসপুর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাস চলা অবস্থায় ছুটি দেওয়া হয়। স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষা থাকলেও তা আগেই স্থগিত করা হয়। তবে একই চত্বরে অবস্থিত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়া হলেও সম্মেলনের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার তাগিদেই এই ক্লাস নেওয়া হয় বলে অভিভাবকরা দাবি করেছেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মাইকের শব্দে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।’
এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক জনসমাগম হয়। এ কারণে শিশুদের ক্লাস নিতে সমস্যা হয়েছে, তবুও দরজা-জানলা বন্ধ করে ক্লাস নিচ্ছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ না থাকায় স্কুল ছুটি দিতে পারিনি।’
এ দিকে গুরুদাসপুর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু বলেন, এই সম্মেলনের কারণে মঙ্গলবার সকালে ক্লাস শুরু হলেও স্কুল ছুটি দিয়েছেন। তবে তিনি দাবি করে বলেন, আজ কোনো নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল না।
জেলা শিক্ষা অফিসার আখতার হোসেন বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ উপজেলার শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি তিনি জানবেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন, তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
এ দিকে স্কুল মাঠে সম্মেলন আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বলেন, ‘আমি তথ্য পেয়েছি সম্মেলন কেন্দ্রের ১ কিলোমিটারের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। আগে জানলে আমি আসতাম না। পরীক্ষা শেষ না পর্যন্ত সম্মেলন স্থগিত থাকবে। তাছাড়াও স্কুল খোলা রেখে সম্মেলন করা ঠিক হয়নি।’