আওয়ামী লীগ নির্বাচনে চুরি করার জন্য সকলকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রেখে, নিজেরা সিল মেরে আগের রাতে ভোট শেষ করে বলে ভোট হয়ে গেছে, আমরা জিতে গেছি। আওয়ামী লীগ এমন করে, কারণ তারা জানে জনগণ ভোট দিতে পারলে ১০টি আসনও পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৪ জুন) বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তাদের অধীনে ভালো নির্বাচন হয়। সংবিধানে লেখা আছে রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। কিন্তু সেই জনগণ ভোট দিতে পারে না। দুটি প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি।
সদ্য সমাপ্ত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আলেম সাহেব, শ্রদ্ধার মানুষ চরমোনাইয়ের নায়েবে আমিরকে আঘাত করতে দ্বিধা করলো না। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা করছে, তিন কি ইন্তেকাল করেছেন? শেখ হাসিনা এমন নির্বাচন কমিশনার বানিয়েছেন যিনি (সিইসি) না মরলে শান্তি পান না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ কি পরিমাণ চুরি করেছে তা চিন্তা করা যায় না। কিছুদিন আগেও খবর বেরিয়েছে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের অনেক টাকা জমা। আর বাংলাদেশের অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী যখন সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ করে এলেন, তারপর খবর বের হলো সেই সুইস ব্যাংকের টাকা নাকি উধাও হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ জানে, আওয়ামী লীগ শুধু ভোট চোর না এরা সবকিছু থেকে চুরি করে। সরকার দেশে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র করলো। ঘোষণা দিল ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। তাহলে এতগুলো বিদ্যুৎ গেলো কোথায়? সরকারের একমাত্র লক্ষ্য চুরি-ডাকাতি করে বিদেশে পাচার করা।
আজকের তরুণ সমাবেশের একটাই উদ্দেশ্য শেখ হাসিনাকে বিদায় করা।
বরিশালের মাটি রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক ঐতিহ্যবাহী উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক যিনি শুধু বরিশালের নয় অবিভক্ত বাংলার বীরত্ব লিখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে এই বরিশালে অনেক ত্যাগী বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অনেক আত্মত্যাগ করেছেন তারাও এই বরিশালের মাটিতে রয়েছেন। আর আজকে নতুন একটা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই সংগ্রাম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১২ সালে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্কুলে পড়া ছেলে মিরাজ খান, কলেজে পড়া ছেলে ফিরোজ খানকে তুলে নিয়ে গেছে। শুধু এই দুইজন নই আমাদের ইলিয়াস আলীসহ ৭ শতাধিকের ওপরে নেতা-কর্মী গুম করেছে এই সরকার। মিরাজ-ফিরোজর মা, ইলিয়াস আলীর সন্তানেরা অপেক্ষায় থাকে এই বুঝি তাদের সন্তান, তাদের পিতা ফিরে এলো। ফ্যাসিবাদ সরকার শিশুদেরকে পিতৃহারা করেছে, মায়েদের কোল খালি করেছে, ভোলার রহিমের স্ত্রীকে স্বামীহারা করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই অবৈধ সরকার ১৫ বছর ধরে সারাদেশে লুটপাট, চুরি, বিদেশে পাচার ও অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছে।
ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, যুবদল বরিশাল বিভাগের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান মামুন, মহানগর ছাত্রদল সভাপতি রেজাউল করিম রনি, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।