গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় দলের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগের দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
এর আগে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি ওঠে।
আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজে এবং তার মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়। কিন্তু তার মা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন। এখন মায়ের পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ভোটও চাইছেন।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সূত্র জানায়, রোববার বৈঠকে নেতারা বলেন, জাহাঙ্গীর আলম আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। এরপর দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ক্ষমা চাওয়ায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এখন তিনি ফের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। শুধু তিনি নন, তার মাকেও প্রার্থী করেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর মায়ের পক্ষে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। এ সময় দলের বিপক্ষেও কথা বলেন তিনি। এর আগে ২০১৩ সালেও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এসব কারণে তিনি আওয়ামী লীগ করার অধিকার হারিয়েছেন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা জাহাঙ্গীরের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে একমত হন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে সভাপতি শেখ হাসিনাকে জানাবেন। জাহাঙ্গীর আলম যেন দলের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হতে পারেন, ওই সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সুপারিশের কথা দলীয় প্রধানকে জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জাহাঙ্গীরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন।
২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ হবে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দলটির গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি আজমত উল্লা খান।
দল থেকে বহিষ্কারের আগে সম্পাদকমণ্ডলীর সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেছিলেন, ‘আমি বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। অন্য কোনো মাধ্যমে বিষয়টি আমি জানি না বা কেউ জানায়নি।’
কোনো অবস্থাতেই তিনি নির্বাচন থেকে সরে যাবেন না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাকে তার পাশে থাকতেই হবে। আমি এবং আমার মা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব।’