আওয়ামী লীগ দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কিছু দিন ধরে সরকারের মন্ত্রী-নেতারা বারবার করে একটা কথা বলছেন- অগ্নিসন্ত্রাস হবে, আবার আগুন নিয়ে খেলবে বিএনপি। এটা কিন্তু অত্যন্ত পরিকল্পিত একটি বক্তব্য। তারা (ক্ষমতাসীনরা) সন্ত্রাস করবে সেজন্যই এ কথাগুলো বলতে শুরু করেছে। কিছুটা সফলও হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দূতাবাস থেকে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করা হচ্ছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, সংঘাত হতে পারে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই সন্ত্রাসী, আওয়ামী লীগ মানেই দুর্নীতিবাজ। দলটির রসায়ন থেকে এ দুটো বের হয়ে আসে।
সোমবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত ‘দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা: লুটপাট আর অরাজগতার চালচিত্র’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি খুলনা, রাজবাড়ী, নেত্রকোনা, পটুয়াখালীতে ক্ষমতাসীনরা সন্ত্রাস করেছে। এর কারণটা হচ্ছে প্রতিবাদকে বন্ধ করতে হলে সন্ত্রাসই একমাত্র পথ। এ সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের দাবিকে তারা দাবিয়ে দিতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা বাংলাদেশকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। আরও পাঁচ বছর লুট করতে তারা ভোট চাইতে শুরু করে দিয়েছে। আর বলছে, নির্বাচন তো হবে, নির্বাচনে আসেন। হাত-পা বাঁধা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, মুখ বন্ধ। ইতোমধ্যে আবার খেলা শুরু করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে, অত্যাচার-নির্যাতন করছে, গায়েবি মামলাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এবার কোনো পাতানো নির্বাচন, দিনের ভোট রাতে করার নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ পা দেবে না। এ ফাঁদে মানুষ পা দেবে না।
তিনি বলেন, আমরা মারামারি করতে চাই না, সংঘাত চাই না। সরকারের পদত্যাগসহ আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। সুন্দরভাবে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে। আবারো স্পষ্ট করে বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দবি মেনে নিতে হবে। তত্ত্বাধায়ক সরকার ছাড়া এখানে কোনো নির্বাচন হবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজের রূপে আবির্ভূত হয়েছে, পুলিশ দিয়ে প্রতিরোধ করছে। জনগণ যখন প্রতিবাদ করতে যায়, তখন পুলিশ ব্যবহার করে তাদের দমন করছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন পুনরায় শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জেলায় পুলিশ হামলা শুরু করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় সরকারি দলের গুন্ডারা হামলা করেছে। সভা পণ্ড করে দিয়েছে। ভয়ের রাজত্ব কায়েম করছে। অগ্নিসন্ত্রাসের নামে তারাই আগুন দিয়ে মানুষ মেরেছে।
অ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কেএস আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ইউনিভারসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।