বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কিনা, সেটি বিএনপির বক্তব্যের বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা বিএনপি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া মালিক না।
তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের মালিক জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে- কে নির্বাচন করতে পারবে, কে পারবে না।
শুক্রবার (৯ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে জুলাইযোদ্ধাদের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, এটা নিয়ে আমাদের দলের মহাসচিব বলেছেন যে ‘এটা জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে আর কারা করবে না।’
আওয়ামী লীগকে জিজ্ঞাসা করা উচিত, তারা কি আসলে নির্বাচন, গণতন্ত্র চায় এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গত ৯ মাসে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা কি বলেছে- গত ১৫ বছর তারা মানুষের ওপর ফ্যাসিস্ট কায়দায় জুলুম করেছে, লুটপাট করেছে, দেশকে তছনছ করে দিয়েছে, তারা ভুল করেছে, দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা স্বীকার করে নিচ্ছে। কেউ বলেনি।
এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র দ্য কার্টার সেন্টার নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক হয়।
বৈঠকে আলোচনা বিষয়বস্তু সম্পর্কে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসাথে তারা হয়ত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতেও আসতে পারে।‘নির্দিষ্টভাবে তারা (কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দল) যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন, সেটা হচ্ছে নির্বাচনে তারা হয়ত মনিটরিং করতে আসতে পারেন। যদি সেটা হয়, তবে কিভাবে সম্ভব হতে পারে এবং সেটা কখন, মূলত এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, ‘দেখুন আমি কারো সমালোচনা করতে চাই না। একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি হয়েছে, আমি তাদেরকেও বলেছি, আমরা এরশাদের পতনের সময় দেখেছিলাম একটি কেয়ারটেকার সরকার এবং সেটাও একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। তারাও ৯০ দিনের মাথায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে উপহার দিয়েছিল এবং আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ সেটার সমালোচনা করে না।কাজেই এটা বুঝতে হবে যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নিতে হবে তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে করা সম্ভব, এখন তো ইতিমধ্যে নয় মাস হয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আলোচনায় আসবে… আমরা যদি নাও করি মানুষ চুপ করে থাকবে না। আলোচনা হয়েছে কত দ্রুত এটা করা যায় এবং বিএনপি কখন এই নির্বাচনটি প্রত্যাশা করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের দলের বক্তব্য স্পষ্ট- যেটা ইতিমধ্যে দেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, আমরা বলেছি যে এ বছরের শেষ নাগাদ যদি নির্বাচন হয় তাহলে এটা জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা বিশ্বাস করি অহেতুক যদি বিলম্ব হয় যে সমস্যাটি আপনারা দেখতে পারছেন আজকে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি সেটা আজকে থেকে নয় মাস আগে ৫ আগস্টের যে পরিস্থিতি ছিল, তার থেকে ভালো নয়।’
বিএনপি সিনিয়র এই নেতা বলেন, যদি দেশের স্থিতিশীলতা কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে এটা ১৮ কোটি মানুষের জন্য সুখকর হবে না। সেজন্য একটি কথা আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে জনগনের সত্যিকার প্রতিনিধি, সেই সত্যিকার প্রতিনিধি যেটা নির্ধারিত হতে পারে একমাত্র একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নির্বাচনটি যত শিগগিরই হয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি সেটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে …সেই কথাটি আমরা তাদেরকে বলেছি।