বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার স্পষ্টতই বুঝে গেছে যে তারা এখন চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রায়শই তাদের অসংলগ্ন কথাবার্তা দেখে তাই মনে হয়।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে কথা বলায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। তাদের একজন মন্ত্রী বললেন- ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে। তাহলে আমেরিকার বিরুদ্ধে হঠাৎ সরকারপ্রধানসহ মন্ত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কেন?
আজ মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকারপ্রধানসহ ক্ষমতাসীনদের নিজেদের সন্তান-সন্ততিকে আমেরিকা ও ইউরোপে পুনর্বাসন করে। কিন্তু এখন তাদের স্বার্থে আঘাত লাগায় এখন ওই সব দেশ সম্পর্কে আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলছেন তারা।
সারা দেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে মানুষের এখন ত্রাহি অবস্থা উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী বলেন, গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় এখন ২-১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ আসে। মফস্বল শহরগুলোতে রাতে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। রাজধানীতে ভয়াবহ খরতাপের ধুমায়িত বহ্নিতে মানুষ মনে হয় গ্যাস চেম্বারের মধ্যে বসবাস করছে। এখানেও দিনে-রাতে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না।
তিনি বলেন, শুধু নিজেদের ঘনিষ্ঠজনকে বিপুল-অর্থবিত্তের মালিক করার জন্যই রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ভতুর্কির নামে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা পকেট থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এটি যে ছিল এক ধরণের জালিয়াতি, সেটিই এখন বিকট লোডশেডিংয়ের আত্মপ্রকাশ-তার সুষ্পষ্ট প্রমাণ জনগণ দেখতে পাচ্ছে।
সরকার বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের সুযোগ দিয়ে ফৌজদারী অপরাধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট সামিট গ্রুপসহ বিভিন্ন প্রাইভেট বিদ্যুৎ স্থাপনা কেন্দ্র। তাহলে আজ কেন পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটকে বৈধ করতেই ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চে এ বর্বরোচিত হামলার তীব্র ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, সোমবার বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলা গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের গাড়িবহরে সশস্ত্র ‘আওয়ামী’ সন্ত্রাসীরা পৈশাচিক হামলা চালিয়ে ছয় জনের বেশি নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে।