হিজরি বর্ষ অনুসারে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হয়। সেই হিসেবে আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সারাদেশে ‘লাইলাতুল বরাত’ পালিত হবে। যেটিকে বলা হয়, সৌভাগ্যের রজনী।
ফার্সি ভাষায় ‘শব’ শব্দটির অর্থ হলো, রাত বা রজনী। আর ‘বরাত’ শব্দটি আরবী ‘বারাআত’ শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে। অর্থ হলো, মুক্তি পাওয়া, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া। ‘শবে বরাত’ অর্থ হলো, মুক্তির রজনী। যেহেতু এ রাতে অগণিত মানুষকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় বলে বিশ্বাস করা হয় তাই এ রাতকে শবে বরাত বলা হয়।
তবে কুরআন-হাদিসে কোথাও ‘শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত’ পরিভাষাটি ব্যবহার হয়নি। সাহাবী ও তাবেয়ীগণের যুগের অনেক পর এই পরিভাষাটির প্রচলন শুরু হয়। হাদিস শরীফে এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ‘শাবানের মধ্য রজনী’ বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে পরিভাষার বিষয়টি যেহেতু প্রশস্ত। তাই এ রাতকে ‘শবে বরাত’ বা ‘লাইলাতুল বরাত’ বলতে সমস্যা নেই।
হাদিসে এ রাতের ফযিলত নিয়ে ওঠে আসে– মুয়ায ইবনু জাবাল রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ”আল্লাহ তায়ালা শাবানের মধ্য রজনীতে সমস্ত সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি প্রদান করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত তার সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করে দেন”। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১২৯৬০)
আবু বকর রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবীজি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ তায়ালা প্রথম আকাশে নুযুল করেন। এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত তাঁর অন্যান্য বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন”। ‘মুসনাদুল বাযযার ৮০ হাসান
আবু মুসা আশআরী রাযি. থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ”আল্লাহ তায়ালা শাবানের মধ্য রজনীতে বিশেষ দৃষ্ট প্রদান করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত তার সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করে দেন”। সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৩৯০ হাসান।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষ্যে আগামীকাল শনিবার সরকারি ছুটি থাকবে।
এই রাতে দেশের মানুষ নিজের বাড়িতে ছাড়াও মসজিদগুলোতে নফল নামাজ আদায় করেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ, মিলাদ মাহফিলসহ ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটাবেন। মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মুসলমানরা বিশেষ মোনাজাত করবেন।