মালয়েশিয়ায় চরমপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে সম্প্রতি যেসব বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতাদর্শে অনুপ্রাণিত এবং সরাসরি জড়িত ছিল বলে দাবি করেছে দেশটির পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল।
তিনি জানান, আটকদের মধ্যে কয়েকজনকে ‘সিকিউরিটি অফেন্সেস (স্পেশাল মেজারস) অ্যাক্ট ২০১২’, যেটি সংক্ষেপে ‘সোসমা’ নামে পরিচিত, সেই আইনের আওতায় আটক রাখা হয়েছে। অপরদিকে, অনেকে তদন্তের পর নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার জাতীয় দৈনিক নিউ স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে সোমবার (৩০ জুন) এই তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামিক স্টেটের উগ্র মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে একটি চরমপন্থী নেটওয়ার্ক গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল এমন সন্দেহে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিক প্রদেশে অভিযান চালায়।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল জানান, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে সেলাঙ্গর ও জোহর প্রদেশে তিন ধাপে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযানে মোট ৩৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।
তাদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ এনে শাহ আলম ও জোহর বারুর সেশন কোর্টে মামলা করা হয়েছে। ১৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর বাকি ১৬ জন এখনো পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক খালিদ ইসমাইল আরও জানান, এই বাংলাদেশি গোষ্ঠীটি আইএস-এর কৌশল অনুসরণ করে একটি নতুন সেল গঠনের চেষ্টা করছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে চরমপন্থী মতাদর্শ প্রচার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার লক্ষ্যে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা।
মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের গোয়েন্দা তথ্যেও এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
পুলিশ বলছে, এই সংবেদনশীল বিষয়টি ঘিরে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে বিস্তারিত তথ্য আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।