রাজধানী ঢাকা যেন হয়ে উঠেছে দাবি-দাওয়া আর আন্দোলনের নগরী। শাহবাগ মোড়, রাজু ভাস্কর্য, সায়েন্সল্যাব, মহাখালী আর উত্তরা। যার যেখানে সুবিধে সেখানেই করছে আন্দোলন। স্থবির হয়ে পড়ছে নগর জীবন। এইসব আন্দলনে একেক পক্ষের দাবিও একেক রকম, কারও দাবি চাকরি স্থায়ীকরনের, স্কুল-মাদ্রাসায় নন এমপিওভুক্তি থেকে এমপিওভুক্তি করণের দাবি, শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ, কেউ চায় কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, প্রেয়সী নিয়ে কারও বাকযুদ্ধ থেকে হয় ইটযুদ্ধ। হতাহত হতে থাকে উভয়পক্ষ, সাথে আহতের তালিকায় সাধারণ পথচারীও বাদ যায় না। বন্ধ থাকে সড়ক আর ভুগতে থাকে নগরীর জনতা। গাড়ি নড়ে না, চড়ে না। কবে থামবে এইসব আন্দোলন, সংঘাত। দাবি-দাওয়া পূরণ হতে আর ‘কতদেরী পাঞ্জেরি!’
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবার আন্দোলনকারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানিয়েছে, ‘বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়, প্রতিবাদ কর্মসূচি ইত্যাদি নামে রাজধানীতে সম্প্রতি যখন-তখন সড়ক অবরোধের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অফিসগামী যাত্রীগণ নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিদেশগামী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী পরিবহনে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক ব্যাঘাত। যানজট কমানোর জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে, তথাপি, কারনে-অকারনে রাস্তা অবরোধ করার মতো ঘটনায় সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক জনদুর্ভোগ। এমতাবস্থায়, সম্মানিত নগরবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে অহেতুক সড়ক অবরোধ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুরোধ করা হলো।’
সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি থাকা অনুরোধ কী মানবে দাবি-দাওয়া নিয়ে হাজির হওয়া আন্দোলনকারীরা। সড়ক অবরোধই কী দাবি আদায়ের সহজ এবং একমাত্র পন্থা নাকি আরও কিছু প্রক্রিয়ার কথা ভাবতে ইচ্ছে হয় না কোনো পক্ষেরই। কিংবা সহজ পথে দাবি আদায় হবে না বলেই ধরে নিয়েছে আন্দোলনপ্রমিরা।
তবে, এটাও মানতে হবে সড়ক অবরোধ ছাড়া দেশ থেকে স্বৈরাচার সরকারেরও পতন হতো না। ন্যায্য আন্দোলন সংগ্রাম ও দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথেই দাঁড়ানো হলে জনতা পাশে এসে থাকবে কিন্তু মনমতো চাওয়া নিয়েই সরকার ও নগরবাসীর দুর্ভোগ করে সড়ক অবরোধ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে নগরবাসিই আইন হাতে তুলে নিতে পারে।