রাজধানীর শাহবাগ থেকে কাটাবন অভিমুখের সড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। যতক্ষণ পর্যন্ত চিকিৎসকদের দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক ছেড়ে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
রবিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে আন্দোলনত চিকিৎসকরা তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে শাহবাগ মোড়ে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। এর পর তারা শাহবাগ থেকে কাটাবন অভিমুখের সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখেন।
তারা অভিযোগ করেছেন পুলিশ আন্দোলনরতদের উপর হামলাও চালিয়েছে।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত ডা. তানভীর আহমেদ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, শুরুতে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বটতলায় সমবেত হই। পরবর্তীতে আমরা শাহবাগের জাদুঘরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেট বন্ধ করে রাখে তারা। শুধু তাই না; তারা আমাদের উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন।
তিনি জানান, “ডাক্তারনামধারী চিকিৎসকরা সড়কে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছ” এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়। এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা ডাক্তারনামধারী না, আমরা ডাক্তার। আমাদের দাবি যৌক্তিক।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত চিকিৎসকদের দাবি আদায় না হবে; ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক ছেড়ে যাব না। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আমরা ৩নং গেট থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে সেখানে পুলিশ আমাদের গায়ে হাত দেয় এবং মারধর করার চেষ্টা করেন। আমাদের বেশ কিছু চিকিৎসক সেখানে আহত হন। পরে আমরা ৫নং গেট দিয়ে বের হয়ে শাহবাগে যেতে চাইলে ফের পুলিশ আমাদের ওপর আক্রমাণত্মক হয়। আমাদের নারী সহকার্মীদের ওপরও আঘাত করেছে তারা।
এক নারী চিকিৎসক বলেন, নারী পুলিশ ছাড়াই তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের বেশ কিছু চিকিৎসক আহত হয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে, সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।
সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ মোড়ে আসতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে বলে জানান মিডলাইন বাসের চালক মো. আতিক। তিনি বলেন, ডাক্তাররা সড়র অবরোধ করে রাখায় ২০ মিনিটের রাস্তা পার করতে দেড় ঘণ্টার জ্যাম উপেক্ষা করেছি।
এর আগে, শনিবার (১৫ জুলাই) ‘আশ্বাস নয়, প্রমাণ চাই – ৫০ হাজার টাকা ভাতা চাই’ – এ স্লোগান নিয়ে কর্মবিরতিতে নামেন তারা। ওইদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বাগান গেটে অবস্থান নিয়ে দিনের কর্মসূচি পালন করেন। ভাতা বাড়ানোর দাবিতে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে তারা র্যালি বের করেন; পরে সেটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
গত ১০ জুলাই পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধিদল তাদের দাবির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে ফিরে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ভরসা রেখে তাদের মঙ্গলবারের পূর্বঘোষিত শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাদের দাবির বিষয়ে তেমন কোনো সাড়া না পাওয়ায় শনিবার আবারও তারা আন্দোলনে নামেন; যা আজও অব্যাহত ছিল।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস্ (বিসিপিএস)-এর অধীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা ভাতা বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। গত ৮ জুলাই বেলা ১১টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।
ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা এবং এ ভাতা নিয়মিত করার দাবিতে তারা এ কর্মবিরতিতে নেমেছেন।