সময়টা ২০১৩। শাহবাগ মোড় দখল করে চলতো আন্দোলন- স্লোগানের পর স্লোগান। কিন্তু সেইসব স্লোগানে কিংবা আন্দোলনে উঠে আসেনি দেশের সাধারণ মানুষের দাবি দাওয়া। তাহলে কী ছিল সেখানকার অবস্থা, মূলত, ছিল আওয়ামী মতের বিরোধী যারাই কথা বলেছেন, যাদেরকে ফ্যাসিস্ট সরকার চক্ষুশূল মনে করেছে তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে শাহবাগের সেইসব তথাকথিত আন্দোলনকারীরা।
গণজাগরণ মঞ্চের নাম দিয়ে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে যুদ্ধপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে চলতো এইসব আন্দোলন। বিরোধী মতের রাজনৈতিক নেতাদের যুদ্ধ অপরাধীর ট্যাগ দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারের নির্দেশেই এই মঞ্চ কাজ করত।
সেই গণজাগরণ মঞ্চ থেকেই উঠে আসে লাকি আক্তার, তিনি ছিলেন এই মঞ্চের আরেক সংগঠক। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দীয় সভাপতি পদে অধিষ্টত হন। লাকি আক্তার স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সামনের সারির কয়েকজনের মধ্যেই ছিলেন।
তবে, দীর্ঘদিন ধরে লাকি আক্তারকে খোঁজ না মিললেও গতকালকে লাকি আক্তারকে নতুন রূপে শাহাবাগে দেখা গেছে। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্লাটফর্মের সদস্যরা প্রধান উপদেস্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করলে হোটেল ইন্টারকন্টিন্যালের সামনে পুলিশ বাধা দেয় , এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের সাথে সমঝোতায় আসে যে, তাদের প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবে। আচমকা আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা করে, এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। ফলে পরর্বতীতে পুলিশ বাধ্য হয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
এদিকে এ ঘটনারই সুযোগ নেয় লাকিন আক্তারেরা, গতকাল সন্ধায় লাকি আক্তার এক মশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চালায়।
এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কিত এই বাম আন্দোলনের নেত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে। যার কারনে গতকাল রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশকটি বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষার্থীরা লাকির গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ সময় লাকি আক্তারকে গ্রেপ্তারের জন্য সরকারকে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। তারা স্লোগান দিতে থাকেন ‘শাহবাগ নো মোর, ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা, চব্বিশের বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই, শাহবাগীরা হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এদিকে, গতকাল পুলিশের ওপর বামজোটের নেতৃত্বে হামলার, লাকি আক্তারের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং ‘জুলাই জনতার মানববন্ধন’ ব্যানারে কর্মসুচির ডাক দেওয়া হয়।