দখলদার ইসরায়েলি সেটেলার তথা অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা জেরুজালেমে মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান ও প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়ে এটি ভেঙে ফেলে তার জায়গায় একটি টেম্পল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বলে সতর্কতা জারি করেছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, মন্ত্রণালয়ের সতর্কতায় বলা হয়েছে, সেটেলার সংগঠনগুলো হিব্রু ভাষার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আলোচনা চালাচ্ছে যে, তারা আল-আকসায় মসজিদে হামলা করে এটি ভেঙে সেখানে একটি টেম্পল নির্মাণ করবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আল-আকসা মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনাকে আমরা অধিকৃত জেরুজালেমে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র স্থানে পদ্ধতিগত উস্কানি হিসেবে বিবেচনা করি।’
বিবৃতিতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আমরা আন্তর্জাতি সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এই উস্কানিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব নিয়ে দেখা এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইহুদিরা আল-আকসার জায়গাতে একটি টেম্পল বানাতে চায় যেটাকে তারা ‘থার্ড টেম্পল’ অভিহিত করে। তাদের বিশ্বাস, ‘টেম্পল মাউন্টে’ তাদের পয়গম্বর আব্রাহাম (ইসলামে নবী ইব্রাহিম আ.) তার পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন।
তাদের বিশ্বাস মতে, এখানেই ছিল ইহুদিদের ‘ফার্স্ট টেম্পল’ সেকেন্ড টেম্পল’। তারা মনে করে, তিন হাজার বছর আগে রাজা সুলেমান (হজরত সুলাইমান আ.) এখানে প্রথম টেম্পল নির্মাণ করেছিলেন। যেটি ধ্বংস করে দেয় ব্যাবিলনীয়রা।
আল-আকসা শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রার্থনার স্থান হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি সেটেলার বা অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা প্রায়ই এখানে জোরপূর্বক ঢুকে পড়ছে। নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা সেখানে প্রার্থনা করছে। এতে তাদের সরাসরি সহায়তা করে দখলদার ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এসব সেটেলার বা অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত ভূমিতে জোরপূর্বক বাস করে। তারা দখলদার ইসরায়েলি সরকার থেকে সব ধরনের সুরক্ষা পেয়ে থাকে। গত সপ্তাহেও আল-আকসা মসজিদে কয়েক ডজন ইসরায়েলি সেটলার জোর করে ঢুকে ধর্মীয় আচার পালন করেছে।
জেরুজালেমের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার চুক্তি অনুযায়ী, ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত ওই মসজিদ চত্বরে অমুসলিমদের কোনো ধরনের ধর্মীয় আচার পালনের অনুমতি নেই। ১৯৬৭ সালে আল-আকসা নিজেদের দখলে নেয় ইসরায়েল। চুক্তি অনুযায়ী, সেখানে মুসলমানরা নামাজ আদায় করতে পারেন। আর ইহুদিরা প্রবেশ করতে পারেন, তবে প্রার্থনার অনুমতি নেই তাদের।