জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় সংঘটিত গণহত্যা ও ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য, তৎকালীন পুলিশ সুপারসহ মোট ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই মামলার প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন গ্রেফতার হওয়া সাতজন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হিল কাফি ও শাহিদুল ইসলাম।
তদন্তে উঠে এসেছে, আশুলিয়ায় ২০২৪ সালের ভয়াবহ ওই ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে ছয়জনকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গোপন করতে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ১৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, ঢাকার তৎকালীন পুলিশ সুপার, বিভিন্ন পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
তদন্ত সংস্থা বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হবে।
একই দিনে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলার কার্যক্রমও চলে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে আদালতে তোলা হয়। একই সঙ্গে গুম সংক্রান্ত মামলায় উপস্থাপন করা হয় জিয়াউল আহসানকে।
এছাড়া জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত থাকা অবস্থায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষ থেকে আইনি প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হতে পারে আজকের মধ্যেই। বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চলছে।
প্রসিকিউশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আশুলিয়ার ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং সংঘবদ্ধ একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। অভিযোগপত্রে যাদের নাম এসেছে, তারা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান ছিলেন। সেই কারণে এই মামলার গুরুত্ব অনেক বেশি।