আওয়ামী লীগ একটানা অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আওয়ামী লীগ আসার আগে কে এতো কথা বলার সুযোগ পেয়েছে বলেন তো? তবে হ্যাঁ, এখন শুনি, সব কথা বলার পরে বলে- কথা বলার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, ভুলে গেছেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর বারবার ক্যু হচ্ছিল। একটা মিলিটারি ডিক্টেটরের পর আরেকটা মিলিটারি ডিক্টেটর অথবা ডিক্টেটরের স্ত্রী ক্ষমতা নিয়ে গেল ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে। জনগণের কী ছিল তখন? সারারাত কারফিউ। কথা বলার অধিকার নাই। সাদা মাইক্রোবাস হলেই তো কে কখন গায়েব হয়ে যাচ্ছে ঠিক নাই। এইতো ছিল বাংলাদেশের অবস্থা।
আজ বুধবার বিকেল ৪টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। লিখিত বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, সবাই নির্বাচনে অংশ নেবে সেটাই আমরা চাই। আর যদি কেউ না করে, এটা যার যার দলের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা সংবিধান বন্ধ করে রাখতে পারি না। সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যারা তত্ত্বাবধায়ক বা ইত্যাদি বলে চিৎকার করছে তাঁরা ওয়ান ইলেভেনের কথা ভুলে গেছে? ২০০৭ এর কথা ভুলে গেছে? কী অবস্থাটার সৃষ্টি হয়েছিল? কী সাংবাদিক, কী রাজনৈতিক কর্মী, কী ব্যবসায়ী- সবার নাভিশ্বাস উঠেছিল। সেই অবস্থা থেকে তো সবাই অন্তত মুক্তি পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ বিএনপির হাতে নির্যাতিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করল। এরপর থেকে একের পর এক। লাশ টানতে টানতে তো নাভিশ্বাস উঠেছিল আওয়ামী লীগের। আজকে কি সেই পরিস্থিতি আছে? এমনকি আমার দলের লোকও অন্যায় করলে ছেড়ে দেই না। যে অন্যায় করে তার বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিই। এই দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আসুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কথা বলার অধিকার, চলার অধিকার, সমালোচনার অধিকার, প্রশংসা করার অধিকার- সবই তো পাচ্ছেন। কাউকে মুখ বন্ধ করে রাখছি না, বাধা দিচ্ছি না। মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা আমি দিয়েছি- এটা স্বীকার করতে হবে। আমার স্বার্থ- এ দেশের মানুষ ভালো থাকুক। আমি দেশের জন্য কাজ করেছি, মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমার দেশের মানুষ ভালো আছে কিনা আমি সেই হিসাবটাই নিই।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাইলে জনগণ অবশ্যই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সাথে কে থাকবে না-থাকবে… নতুন জোট হবে- হোক, অসুবিধা নাই। আওয়ামী লীগ উদার, দরজা খোলা।
লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। মুক্তিযুদ্ধকালে সহযোগিতা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মিলের কারণে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
এই সফরে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সম্মতি এসেছে। বাংলাদেশ ও ভারত সমৃদ্ধশালী দুই দেশে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।