ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় দলটির আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, আওয়ামী লীগের মতো বড় একটি দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ না পেলে দেশে-বিদেশে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে তো? তবে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি ইঙ্গিত দিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও সেই নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে পারে। তিনি জানান, জাতিসংঘের সংজ্ঞা মতে সমাজে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণকেই অন্তর্ভুক্তিমূলক বলা হয়।
বুধবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনৈতিক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের এক অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস।
অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ অন্তর্ভুক্তিমূলক বলতে মনে করে রাজনৈতিক দলের নয় বরং সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ যেন ভোট দিতে পারে। নারী, নৃ-জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ যেন ভোট দিতে পারে– এ বিষয়টিকে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন বলছি।’
আওয়ামী লীগের না থাকলে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমুলক হবে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির মানে হলো প্রতিটি বাংলাদেশের নিজের কণ্ঠস্বর থাকা।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস বলেন, ‘এই প্রশ্ন সরকারকে করতে হবে। আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কোনো কিছু বলছি না। আমি বোঝাতে চাইছি যে, জাতিসংঘ কোনো রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয়।’
এ সময় তিনি জানান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তি সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে সহায়তা করবে। জাতিসংঘের দূত বলেন, ‘তবে আমি মনে করি পরিস্থিতিও দেখতে হবে….দেশের অবস্থা দেখে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা খুবই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং সরকারের সিদ্ধান্ত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার উদ্যোগকে জাতিসংঘ সমর্থন করে- এমনটা জানিয়ে গোয়েন লুইস বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। এ নিয়ে জাতিসংঘের কিছু বলার নেই।
ঐকমত্য কমিশনের কাজে জাতিসংঘ সন্তুষ্ট জানিয়ে গোয়েন লুইস বলেন, ঐক্যমত কমিশনের কাজ জটিল। তিনি প্রত্যাশা করেন তাদের এই উদ্যোগ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিতে সহায়তা করবে।