ইউক্রেনের কাছে থাকা বিদেশী ট্যাংকগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের মূল্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ‘প্রাধান্য পাবে’ বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, পশ্চিমের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্রে যুদ্ধের ফলে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন আবারও জানান, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হলে রাশিয়ার নিরাপত্তার ওপর ঝুঁকি আসবে এবং নতুন করে পশ্চিমের আরও অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ঘোষণায় বৈশ্বিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে এবং সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়েছে।
সম্প্রতি ফ্রান্স ইউক্রেনকে দূর-পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পুতিন বলেন, ‘হ্যাঁ, এগুলো ক্ষতি করতে পারে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে এর ব্যবহারে তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা দেখা দেয় না।
তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের কাছে থাকা বিদেশী ট্যাংকগুলোকে রুশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে প্রাধান্য দেবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে হেরে গেছে। তিনি আশা করেন, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ মস্কোকে বাধ্য করবে আলোচনার টেবিলে বসতে।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসতোর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, পুতিন ইতোমধ্যে যুদ্ধে হেরে গেছে। পুতিন প্রকৃত সমস্যায় আছেন। তার ইউক্রেন যুদ্ধে জেতার আর কোনো সম্ভাবনাই ণেই।
এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ন্যাটোর সবচেয়ে নতুন সদস্য রাষ্ট্র ফিনল্যান্ডের মতো ইউক্রেনও এক দিন এই সামরিক জোটের সদস্য হবে। তবে ন্যাটোর নেতারা এখনো ইউক্রেনকে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেননি।
এ নিয়ে পুতিন বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তে ইউক্রেনের নিরাপত্তা একটুও বাড়বে না। বরং সার্বিকভাবে, বৈশ্বিক নিরাপত্তা আরো ভঙ্গুর হবে।’
পুতিন জানান, যেকোনো দেশও তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারে, তবে এতে অন্য কোনো দেশের নিরাপত্তা যেনো বিঘ্নিত না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বুধবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সহযোগীরা রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টি করছেন এবং এর পরিণামে আসতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।
ইউক্রেনে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা পাঠানোর মার্কিন সিদ্ধান্তে মিত্রদের উদ্বেগ ও নিন্দা
লাভরভ ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়া প্রসঙ্গে জানান, এই উড়োজাহাজগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীতে এ ধরনের প্রযুক্তি যুক্ত হলে আমরা একে পশ্চিমের কাছ থেকে আসা সরাসরি পারমাণবিক ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করবো।
রুশ নিরাপত্তা কাউন্সিলের সহকারী সচিব দিমিত্রি মেদভেদেভ মঙ্গলবার সতর্ক করেন, ন্যাটো ইউক্রেনকে সহায়তা করার মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনছে।
আগস্টে রোমানিয়ায় ইউক্রেনীয় বৈমানিকদের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এখনো ইউক্রেনকে কয়টি যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে বা কবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ন্যাটোর মিত্ররা একমত হননি।