পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ সাবেক সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। তারা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত কথিত ‘গণহত্যা মামলার’ আসামি হিসেবে অভিযুক্ত।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) পুলিশ সদর দপ্তর এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন—ইন্টারপোলের কাছে তিনটি ধাপে পৃথকভাবে রেড নোটিশ জারির আবেদন পাঠানো হয়েছে।
ইন্টারপোলে রেড নোটিশ চাওয়া হয়েছে যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে, তাদের মধ্যে রয়েছেন—
শেখ হাসিনা – সাবেক প্রধানমন্ত্রী, ওবায়দুল কাদের – সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আসাদুজ্জামান খান – সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আ ক ম মোজাম্মেল হক – সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, হাছান মাহমুদ – সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাহাঙ্গীর কবির নানক – সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল – সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, শেখ ফজলে নূর তাপস – ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক – সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নসরুল হামিদ – সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, মোহাম্মদ আলী আরাফাত – সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও বেনজীর আহমেদ – সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত সহিংসতায় তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় এদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এসব মামলার তদন্ত চলছে।
আইন অনুযায়ী, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ কোনো ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিকভাবে সনাক্ত ও আটক করতে সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা করে থাকে। একবার রেড নোটিশ জারি হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদেরকে আটক ও প্রত্যার্পণের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
বাংলাদেশ পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্তরা বর্তমানে বিদেশে পলাতক এবং বিচার এড়াতে নানা দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এজন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।