ইউরো টুর্নামেন্টে এক স্পেনিশ তরুণ যেন আলাদা করেই দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। সেই তরুণের পায়ের জাদুতে দর্শকরা মুগ্ধ হচ্ছেন। সেই তরুণ ফুটবলারের নাম লামিন। ইয়ামাল বর্তমান সময়ে ফুটবল বিশ্বে আলোচিত এক নাম। ১৭ বছর বয়সেই এই তরুণ স্প্যানিশ তারকা ফুটবলের জায়ান্ট ক্লাব বার্সেলোনায় নাম লেখান।
বয়সের দিক দিয়ে ইয়ামাল এখনও কিশোর তবে ফুটবল মাঠে তিনি যেন এক পরিপূর্ণ সুপারস্টার। এই তরুণ ফুটবলারের ক্যারিয়ার শুরুই হয়েছে যেন এক জাদুকরী শুরুর মতো।
স্পেনের বার্সেলোনায় খেলা ইয়ামাল, শুধু তার গতির জন্যই নয়, তার টেকনিক এবং শৈলীর জন্যও সবাইকে মুগ্ধ করছে। তিনি মাঠে যা দেখান, তা অনেকেই মেসির সঙ্গে তুলনা করছেন। ইয়ামালের ফিনিশিং, ড্রিবলিং এবং প্রতিপক্ষের কৌশল বুঝে তার পদক্ষেপ নেয়ার শৈলী এক কথায় অতুলনীয়।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ ) রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় লেগে বেনফিকা বনাম বার্সেলোনা ম্যাচে ইয়ামাল আবারও দেখালেন কেন তিনি বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন হয়ে উঠেছেন।এই ম্যাচে বার্সেলোনার ৩-১ জয়ের মধ্য দিয়ে কোয়াটার ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন।
ইয়ামাল ম্যাচের প্রথমেই অসাধারণ ড্রিবলিংয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে রাফিনিয়াকে পাস দিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করেন। এরপর চোখ ধাঁধানো এক কার্লিং শটে বল জড়ান প্রতিপক্ষের জালে—এ যেন আরও একটি রত্ন যোগ হলো তার ঝুলিতে!ইয়ামাল শুধুমাত্র একদিনের তারকা নন, গত এক বছর ধরেই ধারাবাহিক পারফর্ম করছেন।
তিনি স্পেনকে ইউরো জিতিয়েছেন, লা লিগায় প্রতিপক্ষের রক্ষণের ত্রাস হয়ে উঠেছেন এবং জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে গত বছরখানেকের মধ্যে ৪৫টি গোল ও অ্যাসিস্টে অবদান রেখেছেন।এদিকে তিনি যখন প্রথম আলোচনায় আসেন, তখন তাকে বলা হয়েছিল ‘ভবিষ্যতের তারকা’। কিন্তু এখন? তিনি তারকা হিসেবেই প্রতিনিয়তইনিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তর্কসাপেক্ষে বর্তমান সময়ের সেরা তারকা তাকে বলা যেতে পারেই। তবে তার বার্সেলোনা ও স্পেন সতীর্থ গাভি অবশ্য সেই তর্কে গেলেন না। তিনি বলেই ফেলেছেন, ‘তাকে মেসির সঙ্গে তুলনা করা ঠিক নয়, কারণ মেসি এক এবং অদ্বিতীয়… কিন্তু আমার মতে, এই মুহূর্তে লামিনই সেরা। একজন ১৭ বছর বয়সী খেলোয়াড়কে বিশ্বের সেরা বলা কঠিন,কেননা যেখানে বর্তমান ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রী, মোহাম্মদ সালাহ, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এর মতো খেলোয়াড়রা আছেন। কিন্তু ইয়ামাল ইতোমধ্যেই সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছেন। এদিকে, ইয়ামাল লা লিগায় সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট ও গোল তৈরির সুযোগ তৈরি করেছেন। তিনি শুধু নিজে ভালো খেলছেন না, সতীর্থদেরও ভালো খেলতে সাহায্য করছেন। তার কল্যাণে রাফিনিয়ার ফর্ম ফিরে এসেছে, লেভানডোভস্কি এখনও ধারাবাহিক পারফর্ম করছেন এবং বার্সেলোনা আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগের অন্যতম ফেভারিট হয়ে উঠেছে।মেসির সঙ্গে ইয়ামালের তুলনা অবশ্য স্বাভাবিক। তার খেলা, দৃষ্টি, এবং ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা—সবই কিংবদন্তির ছায়া বহন করে। তবে ফুটবল অনিশ্চয়তায় ভরা—ইনজুরি বা ফর্মের ওঠানামা বদলে দিতে পারে সবকিছু। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ তাকে বিশ্বসেরা বলা যাবে কি না এই প্রশ্ন হয়তো ইয়ামালের ভক্ত সমর্থকরা করতেই পারেন।