ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো শুরু করেছে ইরান। ইরানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তারা। ‘ট্রু প্রোমিজ’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ইসরায়েলের অপরাধের শাস্তি দিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও ইরানের এই বাহিনী উল্লেখ করেছে।
ইরানের একটি সূত্র দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনাকে বলেছেন, তেহরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রথম দফা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলের একেবারে ভেতরের লক্ষ্যবস্তু নিশানা করে এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ইরানের এ হামলার পর লেবানন, জর্ডান ও ইরাক তাদের আকাশ পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলও সামরিক উড়োজাহাজ বাদে বাকি সব উড়োজাহাজের জন্য তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র ইরান থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ড্রোন নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন। ওই সব ড্রোন ইসরায়েলে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিছুক্ষণ আগে ইরান তাদের সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের দিকে ইউএভি (আনম্যান্ড এরিয়েল ভেহিকল) নিক্ষেপ করেছে। আইডিএফ উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর জঙ্গি বিমান এবং ইসরায়েলের নৌবাহিনীর নৌযানগুলোও নিজেদের সুরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাতজন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আইআরজিসির বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ইউনিট কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিও রয়েছেন। তিনি সিরিয়া ও লেবাননে কুদস ফোর্সের কার্যক্রম পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ইসরায়েলে হামলা চালানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল ইরান। এ নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নাগরিকদের ইসরায়েল ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ইসরায়েলে অবস্থানরত দেশটির কূটনীতিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের তেল আবিব, জেরুজালেম ও বিরশেবা এলাকার বাইরে যাতায়াত নিষিদ্ধ করে।
ইরানের হুমকির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে ‘লৌহবর্মের’ মতো সহায়তা দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।