শুক্রবার ভোরে ইরানের পরমাণুকেন্দ্র এবং সামরিক ও বেসমারিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে প্রাণ যায় ৭৮ ইরানি নাগরিকের। যার মধ্যে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীও ছিলেন। এরপরই পাল্টা হামলা চালায় ইরান, সেই হামলায় ৩ জন নিহত হন এবং ৮০ জন আহত হন।
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে বাড়তে থাকা এই উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি অধিবেশন আহ্বান করেছে।
জরুরি অধিবেশনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, মধ্যপ্রাচ্য একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান। তিনি উত্তেজনা প্রশমনের ওপর জোর দেন এবং বড় পরিসরের সামরিক সংঘাত এড়াতে সতর্ক করেন।
এদিকে, ইসরায়েলের এমন অতর্কিত হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তিনি জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের কথা জানান এবং বলিষ্ঠ প্রতিক্রিয়ার হুমকি দেন।
হামলার পেছনে ইসরায়েলের দাবি, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ও সামরিক কাঠামো তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানান এবং তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি তোলেন।
যদিও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসে, তবে অবিলম্বে কোনো প্রস্তাব বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো চরম সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
“অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে ইরানের ১০০ টিরও বেশি স্থানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল, যার মধ্যে নাতান্জের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ও বিভিন্ন সামরিক কমান্ড সেন্টার ছিল। তবে নাতান্জের ভূগর্ভস্থ অংশ এবং ফোর্দো-র সুরক্ষিত স্থাপনাগুলো এখনও অক্ষত রয়েছে বলে দাবি ইরানের। তবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা ও আঘাতের অভিঘাত অভ্যন্তরীণ ক্ষতি সৃষ্টি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করে, সেই পাল্টা হামলায় হতাহত হয় ইসরায়েলের অর্ধশতাধিক নাগরিক।
ইরানের ইসরায়েলের হামলার ঘটনা আগে থেকেই জানতেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসারায়েলের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ইরান যদি আলোচনায় না আসে তবে আরও ক্ষয়ক্ষতি মেনে নিতে হবে।