ঈদ উৎসবের ঠিক আগমুহূর্তে সারাদেশে বেড়েছে লোডশেডিং এর পরিমাণ। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি এখন বেশ খারাপ হতে শুরু করেছে। ঢাকা এবং বড় শহরে পরিস্থিতি এখনো নাগালের মাঝেই রয়েছে। জনরোষ এড়াতে ও শপিংমলের চাহিদা মেটাতে রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার দিকে বেশি মনোনিবেশ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যার ফলে শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি আরও খারাপ।
মূলত উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং কষ্ট বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি, বাংলাদেশের (পিজিসিবি) অফিসিয়াল পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মূলত মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশে গ্রীষ্ম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে। চলতি বছর দেশে প্রথম বড় ধরনের লোডশেডিং হয় ২৫ মার্চ। সেদিন মধ্যরাতে প্রায় ২০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়। এরপর ১ এপ্রিল রাত ২টায় লোডশেডিং ৮৫০ মেগাওয়াট অতিক্রম করে।
পিজিসিবির তথ্যে দেখা যায়, গত ২ এপ্রিল বিকেল ৫টায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১১ হাজার ৯৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করলেও বিদ্যুৎ সরবরাহে ৩ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকে। মূলত পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহে সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশে সবসময় ২৫০০ থেকে ৩০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার উৎপাদন ইউনিট অলস রাখতে হয়।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, গ্রীষ্মের শুরু থেকে অর্থাৎ এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে, দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৬৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা পূর্বাভাস দিয়েছেন, এই গ্রীষ্মে দেশের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং গ্যাস সরবরাহ না বাড়ালে ২০২৩ সালের মতো লোডশেডিং পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।
এদিকে গ্যাস সরবরাহে সীমাবদ্ধতার বিষয়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল উৎপাদন শুরু করতে ব্যর্থ হওয়ায় আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার পরিচালক সূত্রে জানা যায়, সামিটের এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ পেতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। এটি সামিটের এলএনজি টার্মিনাল পুনরায় চালু হলে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে।