বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের বিভিন্ন অনিয়মকে প্রশ্রয় না দেওয়া এবং তার প্রতিবাদ করায় পাঁচ মাস আগে নিয়োগ দেওয়া গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হককে অব্যাহতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক পদ থেকে কোস্টাল স্টাডিজ এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হককে অব্যাহতি দিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বর্তমান প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনিকে নতুন পরিচালকের (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে নতুন পরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. সোনিয়া খানের বিরুদ্ধে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে (সিন্ডিকেট ও ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের অভিযোগে) বাসভবনের ফটক ভেঙে প্রবেশ করা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দায়ের করা মামলায় মিথ্যা সাক্ষী হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. হাফিজ আশরাফুল হক অভিযোগ করেছেন উপাচার্যের অনিয়মে সায় না দেওয়ায় তাকে নিয়োগের পাঁচ মাসেই অব্যাহতি দিয়েছেন উপাচার্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে ড. হাফিজ আশরাফুল হককে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। একই নোটিশে আরো দুই শিক্ষককে শারীরিক শিক্ষা অফিসের পরিচালক ও পরিবহন পুলের ম্যানেজারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। একই নোটিশে তিনজনকে দায়িত্বপ্রদানের পাঁচ মাসের মাথায় হঠাৎ একজনকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড়মাস আগে ড. হাফিজ আশরাফুল হক থেকে উপাচার্য একটি চিঠিতে স্বাক্ষর নেন যেখানে উল্লেখ করা হয় গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের এলোকেশন ভাতা রেজিস্ট্রারের এখতিয়ারভুক্ত থাকবে।
জানা যায়, রোববার গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের গবেষণা প্রকল্প চূড়ান্তকরনের একটি মিটিংয়ের ১১ সদস্যের জন্য ৮০ হাজার টাকা টিডিএ বিল ধার্য চেয়েছেন উপাচার্য, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অফিস থেকে বিল পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, এমন সব খাতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করা ও অনিয়মে সায় না দেওয়ায় ড. হাফিজকে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন উপাচার্য।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড.হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়মকে প্রশ্রয় না দেওয়া এবং তার প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এটা উপাচার্যের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।