দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে শনিবার ফের সমুদ্রের দিকে একটি সন্দেহভাজন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দ.কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়ার একদিন পরেই উ.কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
সিউলের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছেন, এদিন বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে পিয়ংইয়ং এর সুনান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে অস্ত্রটি কোথায় পড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা হয়নি।
উ.কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে দ.কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একাধিক পরিকল্পিত সামরিক মহড়া ঘোষণা করে।
এরপর উ.কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ‘অভূতপূর্ব’ শক্তিশালী পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।
উ.কোরিয়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম একটি স্বল্প-পাল্লার অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এবছর উত্তর কোরিয়া ৭০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে অস্ত্র প্রদর্শনে রেকর্ড করেছে। যার মধ্যে মার্কিন মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর সম্ভাব্য সক্ষমতাসহ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
উ.কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো মূলত দ.কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার হুমকি।
উ.কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ২০২৩ সালে তার পরমাণু কর্মকাণ্ড দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি দেশটির পারমাণবিক ওয়ারহেডগুলো ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ ও ‘শত্রু’ দ.কোরিয়াকে লক্ষ্য করে যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক উৎপাদন এবং আরও উন্নত আইসিবিএমগুলো বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত সপ্তাহে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের সময় এক ডজনেরও বেশি আইসিবিএম প্রদর্শন করেন।
সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কিম তার দেশের সামরিক সক্ষমতা সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় অচলাবস্থা বজায় রয়েছে।
শুক্রবার উ.কোরিয়া এক বিবৃতিতে এই বছর ওয়াশিংটন ও সিউলকে ২০ রাউন্ডের বেশি সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। যার মধ্যে বড় আকারের মহড়াও রয়েছে এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাহত করছে’ বলে বর্ণনা করেছে।
দ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইনপ্রণেতা কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে সিউল ও ওয়াশিংটন মার্চের মাঝামাঝি সময়ে একটি বার্ষিক কম্পিউটার-সিমুলেটেড সম্মিলিত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।
দ.কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির উপমন্ত্রী হিও তাই-কেউনের মতে, ১১ দিনের প্রশিক্ষণ উ. কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন অনির্দিষ্ট লক্ষ্য প্রতিফলিত করবে।
হিও বলেন, দুই দেশ মার্চের মাঝামাঝি সময়ে যৌথ মহড়াও পরিচালনা করবে, যা বিগত কয়েক বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া মহড়ার তুলনায় বড় হবে।