ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এই ছবি নিয়ে সারা দেশের সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রণীত প্রশ্নপত্র ধর্মীয় সংবেদনশীলতাকে ক্ষুণ্ন করেছে, অমূলক প্রসঙ্গ টেনে ধর্মীয় উসকানির অভিযোগ এনেছেন বিশিষ্টজনরা।
প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির বিষয়টি স্বীকার করেছে শিক্ষা প্রশাসন।
জানা যায়, রবিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নাটক সিরাজউদ্দৌলা অংশের ১১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকে উসকানিমূলক প্রশ্ন করা হয়।
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এইচএসসির প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এ দেশে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক কিছু থাকবে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চিহ্নিত করছি, এ প্রশ্নটি কে করেছেন, কোন মডারেটর করেছেন। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রশ্ন সেটিংস প্রশ্ন মডারেটিং কাজগুলো এমনভাবে হয়, যিনি প্রশ্ন সেট করে যান তিনি আর ওই প্রশ্ন দেখতে পারেন না। যিনি মডারেট করে যান তিনিও ওই প্রশ্ন দেখতে পারেন না। সেটার ও মডারেটর ছাড়া প্রশ্নের একটি অক্ষরও কারও আর দেখবার সুযোগ থাকে না। আমাদের একটা সুস্পষ্ট নির্দেশিকা আছে, কী কী বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্নগুলো তারা করবেন। প্রশ্নে সাম্প্রদায়িকতার কিছু যাতে না থাকে সেটিও সে নির্দেশিকায় থাকে। ’
প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির বিষয়টি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি আরো বলেন, ‘কোনো একজন প্রশ্নকর্তা প্রশ্নটি করেছেন। যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এটি এড়িয়ে গেছে বা তিনিও হয়তো এটি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। আমরা চিহ্নিত করছি এ প্রশ্নটি কোন সেটার করেছেন, কোন মডারেটর করেছেন। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। যারা চিহ্নিত হবেন তাদের আর প্রশ্ন প্রণয়নের কার্যক্রমের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত রাখা হবে না। ’
এদিকে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রদায়িক ও বিদ্বেষপূর্ণ কোনো বক্তব্য যেন না থাকে সে জন্য প্রশ্নপত্র প্রণয়নে লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে ওরিয়েন্টশন করানো হয়। প্রশ্নপত্র দেখার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ডের প্রশ্নে বিতর্কিত সাম্প্রদায়িক উদ্দীপক ছিলো।ট্রেজারি থেকে পান্ডুলিপি এনে দেখে প্রশ্ন প্রনয়নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।