ঝালকাঠির রাজাপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে রাজাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ প্রায় দেড় শতাধিক স্থানীয় মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের পর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সায়েম আকন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির পদ দখল করেন। অথচ আওয়ামী লীগ আমলে তিনি স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করতেন এবং ‘ফ্যাসিস্টের সহযোগী’ ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।
বক্তারা আরও বলেন, সভাপতি হওয়ার পর থেকে সায়েম আকন একের পর এক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। স্কুল মাঠে বালি ফেলার জন্য বরাদ্দ পাওয়া দুই লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৭০ হাজার টাকার বালি ফেলেছেন। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া, মে মাসে বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া এক লাখ বিশ হাজার টাকার কোনো কাজ না করেই সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মানববন্ধনে আরও অভিযোগ করা হয়, চার দিন আগে বিদ্যালয়ের গাছ থেকে চারটি কাঁঠাল পেড়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান সভাপতি সায়েম আকন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে, নিজের দায় এড়াতে স্থানীয় ছাত্রদল কর্মীদের ‘কাঁঠাল চুরি’ করার অভিযোগ তোলেন তিনি।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে ব্যক্তি বিদ্যালয়ের গাছের কাঁঠাল নিজেই নিয়ে গিয়ে ছাত্রদলের ওপর দোষ চাপায়, সে নৈতিকভাবে এ দায়িত্বে থাকার যোগ্য নয়। বক্তারা সায়েম আকনকে “দুর্নীতিবাজ ও আওয়ামী লীগের দালাল” আখ্যা দিয়ে তার অবিলম্বে অপসারণ দাবি করেন।
উপজেলা যুবদল নেতা এম এ সবুর বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর এই সায়েম আকন ছাত্রলীগের নেত্রী রিয়ার সঙ্গে জন্মদিনের কেক কাটেন। সেই ভিডিও ও অন্তরঙ্গ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রিয়া ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে সায়েমের একাধিক ছবি এখনও সামাজিকমাধ্যমে ঘুরছে।
তিনি আরও বলেন, এতদিন আওয়ামী লীগের দালালি করেও অদৃশ্য শক্তির জোরে সে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা আজকের এই মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে জোরালোভাবে তার অপসারণ দাবি করছি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাবুল বিশ্বাস, লিটু তালুকদার, ছাত্রদল নেতা গোলাম আযমসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সভাপতি সায়েম আকন বলেন, আমার দলের একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে এই মানববন্ধন করিয়েছে।