চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ আর খুলনার পর এবার বরিশালেও বিএনপির সমাবেশের আগমুহুর্তে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যান ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল বন্ধের দাবিতে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে দুই দিন বরিশালের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ।
সংগঠনের সভাপতি গোলাম মাসরেক ও সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে স্বাক্ষরিত এই আবেদনটি মঙ্গলবার বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে মালিক সমিতির নেতারা উল্লেখ করেছেন, ২০২০ সালে ২৯ মে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে এক সভায় দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, ভটভটি, টমটম, আলফা, মাহেন্দ্র, ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে এসব অবৈধ যানবাহন এখনো চলাচল করছে।
এমতাবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন তারা। ওই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ৪ থেকে ৫ নভেম্বর দুই দিন দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল বিরত রাখা হবে।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বুধবার দুপুরে বলেন, মঙ্গলবার বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে দেয়া স্মারকলিপিতে, সড়ক নিরাপদ কল্পে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে অবৈধ যান নসিমন করিমন ভটভটি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, সকল প্রকার থ্রি হুইলারসহ রোড পারমিটবিহীন দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে, চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশের ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে সমাবেশ ডেকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
ওইদিন বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে গণসমাবেশ করার লক্ষ্যে বরিশাল নগরের বেলস্ পার্ক (বঙ্গবন্ধু) উদ্যান চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদনও করেছে বিএনপি।
দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতেই এই অপকৌশল নেওয়া হয়েছে। খুলনায়, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামেও এই একই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনো সফলতা আসেনি। বরং জনতার স্রোত সরকারের দেউলিয়াত্বকেই প্রকাশ করে দিয়েছে। এখানেও এমন অপকৌশল নেওয়া শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান বুধবার দুপুরে বলেন, এ ধরনের আবেদন করা হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। এটা করা হবে সেটাও আমরা নিশ্চিত ছিলাম।
কারণ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং সর্বশেষ খুলনায় এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে সরকার গণসমাবেশ বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি, এখানেও হবে না।
তবে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, মহাসড়কে যাত্রী ও পরিবহনের নিরাপত্তার স্বার্থেই এটা করা হয়েছে।