সংখ্যার বিচারে বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, এবার সংসদে শতকরা ৭৫ ভাগই সরকার দলের। স্বতন্ত্র ২১ ভাগ। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। ৩ থেকে ৪ ভাগ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এ সংসদ কখনও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথমদিনে নব-নির্বাচিত স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে দাঁড়িয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিরোধী দলীয় এ নেতা বলেন, তাঁরা দলীয় আনুগত্যে স্পিকার হলেও বাহ্যিকভাবে চেষ্টা করতেন নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার। আমি আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি আপনি নিরপেক্ষাতা বজায় রাখবেন।
স্পিকারের ডান দিকে সরকার দলের আসন এবং বাম পাশে বিরোধী দলের আসন উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, উদ্দেশ্য ছিল দুপক্ষই সামান হবেন। একটা হল সরকারি দল, আরেকটা হল বিপক্ষ। তারা সংখ্যাও কাছাকাছি থাকবে। তাহলে তাদের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হবে, নিজেদের মতামতকে প্রধান্য দিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়াঝাটি হবে। সংসদে জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে। এটাই ছিল সংসদ তৈরির উদ্দেশ্য।
সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, জাতীয় সংসদ দলমত সকলের মিলনস্থল। সেখানে সরকারি দল এক পক্ষ, সরকারের বিপরীত দল আরেক পক্ষ। নির্বাচন পরবর্তী আসন সংখ্যায় শতকরা ৭৫ ভাগই সরকার দলের। ২১ ভাগ স্বতন্ত্র। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। ৩-৪ ভাগ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এখানে আসন বণ্টনে ভারসাম্যের অভাব হয়েছে। তাই এটাকে সম্পূর্ণভাবে সুন্দর বলা যাবে না।
জি এম কাদের বলেন, শুধু লাল নয়, শুধু সবুজ নয়। যদি সরকারি দলকে লাল বলি তাহলে এ সংসদ সম্পূর্ণ লালময়। সবুজটা শুধু ছিঁটেফোঁটা। এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বর্তমান সংসদ জাতিকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে তা আশঙ্কার বিষয়। ভালোভাবে বললে বলতে হবে বিতর্কের বিষয়। দুই অংশের কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে- অর্থ্যাৎ সরকার ও বিরোধীদের সংসদ কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে যতটা কমবে ততুটুক সংসদ কার্যকর হিসাবে গণ্য হবে।
তিনি আরও বলেন, এ আশঙ্কা অবাস্তব নয়, যদি বলি এ সংসদ কখনও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না। সরকার বিরোধীরা যতবেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বা করবেন ততটুকু হ্রাস পাবে।
সংসদকে কার্যকর ভূমিকায় পরিচালিত করতে কিছু দাবি তুলে ধরেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, বিরোধীদের মতামতকে সংসদে তোলার সুযোগ দেবেন। সংসদের ভারসাম্যের ত্রুটি কমানোর প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।