কথা বললে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কথা বলবেন, অন্য কোনো বিষয়ে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এই সরকার নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আবার নাটক করে। নির্বাচন কমিশন সংলাপের জন্য আমাদের চিঠি পাঠায়। আমরা তো বলেছি, সংকট একটাই—নির্বাচন কীভাবে হবে, কোন ব্যবস্থায় হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কথা বললে সেই বিষয়ে কথা হবে, অন্য কোনো বিষয়ে কথা নয়। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।
সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তৎকালীন জাতীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের ক্ষমতাসীন সরকার তাঁদের নাম উচ্চারণ করে না। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কথা আজ তারা উচ্চারণ করে না। হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী, মাওলানা ভাসানীর নাম একবারও উচ্চারণ করে না। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, যুদ্ধকালীন যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, সেই তাজউদ্দীন আহমদের নাম এরা উচ্চারণ করে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন, সেই জিয়াউর রহমানের নাম তো উচ্চারণই করতে চান না, উপরন্তু বিভিন্ন রকমের অপবাদ দেন। তাঁরা মনে করেন, তাঁরা (ক্ষমতাসীন দল) একাই দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যুদ্ধ করেনি।
এদিকে নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ এমন বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে একজন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা পর্যন্ত নেই। ‘তাঁকে (সুলতানা জেসমিন) র্যাব তুলে নিয়ে যায় এবং পরের দিন তাঁকে দেখা গেছে হাসপাতালে। একেবারেই অজ্ঞান এবং শেষ পর্যন্ত সে মারা গেছে। ডাক্তারেরা বলেছেন, তাঁর মাথার ভেতরে অনেক রক্তপাত হয়েছে, তাঁর কপালে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই হচ্ছে আজকের বাংলাদেশ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, যে র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—যেটা আমাদের জন্য জাতি হিসেবে অত্যন্ত লজ্জার। আবার সেই র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নির্যাতন করে ওই নারীকে হত্যা করার। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, এই সরকারের যত আইন, যত কাজ—সবই হচ্ছে মানুষকে অত্যাচার করার জন্য, নিপীড়ন করার জন্য, ভিন্নমতকে দমন করার জন্য।