পুলিশ কনস্টেবল শওকত হোসেন কোনও যৌক্তিক কারণ এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলেও মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে বলেই সিএমপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে৷
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিএমপির এডিসি (যোগাযোগ) স্পিনা রানী প্রমাণিক একটি গণমাধ্যমকে জানান, কনস্টেবল পদ থেকে মো. শওকত হোসেনকে বরখাস্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। প্রচার মাধ্যমে তার অতীতের কার্যক্রমের বিষয়ে আলোকপাত করা হলেও কী কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে সে বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।
এ কারণে সিএমপির পক্ষ থেকে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে অনুযায়ী, কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার আদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ প্রসঙ্গে…
সিএমপির সাবেক কনস্টেবল মো. শওকত হোসেনকে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদ থেকে বরখাস্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তিনি গত ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মস্থলে (সিএমপির বন্দর বিভাগ) ইচ্ছাকৃতভাবে গরহাজির থাকেন। কোনও যৌক্তিক কারণ এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে গরহাজির থাকা যেকোনও শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য গর্হিত অপরাধ, যা চূড়ান্ত অসদাচরণ হিসেবে গণ্য।
২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আদেশে চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলি করা হয়। চট্টগ্রাম রেঞ্জ অফিস থেকে গত ২০২২ সালের ১৩ মার্চ কুমিল্লা জেলায় বদলি করা হলে তিনি কুমিল্লায় যোগদান করেননি। রহস্যজনকভাবে গরহাজির থাকেন। তার গরহাজির সম্পর্কে কোনও তথ্য কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠাননি। পরে চলতি বছর ১ মার্চ অর্থাৎ ৩৫৩ দিন পর কুমিল্লা জেলায় যোগদান করেন।
বস্তুত তিনি ৪২৪ দিন কর্মস্থল থেকে গরহাজির থাকেন। কুমিল্লা জেলায় গরহাজির থাকায় তাকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। তিনি কুমিল্লা জেলায় গরহাজির হওয়ার প্রতিবেদনে অসুস্থতাজনিত কারণে হাজির না হওয়ার কথা বললেও কোনও চিকিৎসা সনদ উপস্থাপন করতে পারেননি। তবে তিনি চাকরিতে গরহাজির থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবসময়ই হাজির ছিলেন এবং তাকে কোনও সময়ই শারীরিকভাবে অসুস্থ মনে হয়নি।
যিনি এক বছরের বেশি সময় কর্মস্থলে গরহাজির থাকেন, তিনি পুলিশের মতো একটি শৃঙ্খলা বাহিনীতে সংযুক্ত থাকতে পারেন না বলেই প্রতীয়মান হয়। এমন অপেশাদার, শৃঙ্খলাবহির্ভূত কার্যক্রমের পরও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে তা প্রশাসনিকভাবে খারাপ নজির হিসেবেই গণ্য হতো।
তাছাড়া তিনি নিজেই অভিযোগের বিষয়ে আত্মসমর্থনমূলক বক্তব্যে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে অভিহিত করেন। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং মানবিক কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন।
কনস্টেবল শওকতের বিরুদ্ধে গৃহীত বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে তার অতীত কর্মকাণ্ড সম্পৃক্ত করে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।