পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, দেশের মানুষের গড় আয়ু আগের চেয়ে কমেছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণেই গড় আয়ু কমেছে। করোনার কারণে মৃত্যু বেড়েছে। মাতৃমৃত্যুসহ অন্যান্য মৃত্যু বৃদ্ধির কারণও করোনা। এ কারণে গড় আয়ু কম হতে পারে।
সোমবার বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২১ শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিবিএস মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
জরিপের ফল উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক আলমগীর হোসেন। গড় আয়ু কমার কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক এবং বিবিএসের অন্যান্য কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, করোনার কারণে মৃত্যু বেড়েছে। মাতৃমৃত্যুসহ অন্যান্য মৃত্যু বৃদ্ধির কারণও করোনা। এ কারণে গড় আয়ু কম হতে পারে।
তারা বলেন, করোনাকাল হিসেবে ২০২১ একটি অস্বাভাবিক বছর ছিল। সে কারণে ওই বছরের উপাত্তের সঙ্গে আগের বছরগুলোর তুলনা করা ঠিক হবে না। পরবর্তী প্রতিবেদনে সূচকগুলোতে পরিবর্তন আসতে পারে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, করোনাকালের দুই বছর অর্থাৎ ২০২০ ও ২০২১ সালের মৃত্যুহার অন্য বছরগুলোর চেয়ে বেশি। ২০২১ সালে মৃত্যুহার প্রতি হাজারে বেড়ে ৫ দশমিক ৭ জন হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ১ জন।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সাল শেষে একজন মানুষের গড় আয়ু কমে ৭২ বছর ৩ মাসে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালে যা ছিল ৭২ বছর ৮ মাস।
গত বছর নারী ও পুরষের উভয়ের গড় আয়ুই কমেছে। ৭১ বছর ২ মাস থেকে কমে পুরুষের গড় আয়ু ৭০ বছর ৬ মাসে নেমে এসেছে। এ ছাড়া নারীর গড় আয়ু ৭৪ বছর ১ মাস, যা আগের বছর ছিল ৭৪ দশমিক ৫ মাস।
বিগত বছরগুলোতে বিবিএসের উপাত্ত অনুযায়ী, বেশ কয়েক বছর ধরে গড় আয়ু বাড়ছিল। ২০১৭ সালে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর। পরের বছর হয় ৭২ বছর ৩ মাস। ২০১৯ সালে গড় আয়ু দাঁড়ায় ৭২ বছর ৬ মাস। ২০২০ সালে আরও বেড়ে হয় ৭২ বছর ৮ মাস। কিন্তু ২০২১ সালে করোনাকালীন সংকটের সময়ে এসে তা কমে গেছে।