বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে আয়োজিত শোক সভার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে ভিন্ন দিকে নেয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এবং এই অপপ্রচার তাদেরকে ভীত এবং ব্যথিত করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বুয়েট শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
গতকাল বুয়েট শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির পর উদ্ভূত পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে রবিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব কথা জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘গতকালের কর্মসূচি কোনোভাবেই শোক দিবসের অনুষ্ঠানবিরোধী ছিল না। ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে। তার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সদা প্রস্তুত।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন। তার চেতনা ধারণ করতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় প্রয়োজন পড়ে না। বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাতীয় দিবসে নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে’ জানিয়ে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও শনিবার রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার দেখে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে জানান এবং কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থান নেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কালো থাবা নিরাপদ ক্যাম্পাসকে যেন পুনরায় ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না করতে পারে, সেই আশঙ্কার জায়গা থেকে গতকাল সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়। ’
তারা জানান, সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠান যথারীতি শেষ হয় সেখানে কেউ কোনো বাধা দেয়নি। বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহিতা আদায় করা। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারকে রুখে দিয়ে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সদা প্রস্তুত।
সেক্ষেত্রে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনে অবিচল থাকব।
এদিকে সোমবার বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনপত্রে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মাহফিল আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।