কলেজে ভর্তি না হয়েও হয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আর ছাত্রত্ব না থেকেও পেয়েছেন সাধারণ সম্পাদকের পদ। ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার কবির হাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নব গঠিত কমিটিতে।
গত ২৩ মার্চ কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি হন সাইফুল ইসলাম আকাশ। আর সাধারণ সম্পাদক হন নুরুল ইসলাম শাহিন। জানা যায় সাইফুল ইসলাম আকাশ এইচএসসিতে অটো পাসের পর স্নাতকে কোথাও ভর্তিই হননি। অপরদিকে নরুল ইসলাম শাহিনের সেই কলেজে ছাত্রত্বই নেই।
এই কমিটি ঘোষণার পর ইতিমধ্যেই ছাত্রদলের একাংশ অবৈধ কমিটি ও পকেট কমিটি বলে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এছাড়া— ত্যাগি নেতাদের মূল্যায়ন না করার কারণে উত্তাল হয়ে উঠে কলেজটি। কেউ কেউ আবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের বিরুদ্ধে জুতা মিছিলও করে।
এছাড়াও এই অবৈধ কমিটিকে বাতিল করার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে এর আগে গত ১০ এপ্রিল— নোয়াখালীর কবিরহাটে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে প্রবেশ করে অসৎ সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে।
এছাড়া সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাাথে জড়িত থাকার কারনে সাইফুল ইসলাম আকাশকে শোকজও করেছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয়ও নির্বাহী সংসদ।
একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা যায়, নবগঠিত কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশ ২০২০ সালে এইচএসসিতে অটো পাস করেন। তারপর থেকে এই পর্যন্ত তিনি স্নাতকে ভর্তি হননি।
অন্যদিকে কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম শাহিন ২০১৮-১৯ সেশনে স্নাতকে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে তার পর থেকে তিনি পড়াশোনায় অনিয়মিত এবং ছাত্রত্বহীন হয়ে পড়েন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রদল নেতা–কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ছাত্রত্বহীন কবির হাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি। এ ছাড়া আরও বলেন এ কমিটিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। আমরা আগেও এই কমিটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছি, এখনও অবৈধই বলে যাব। যাদের সঙ্গে শিক্ষার কোন সম্পর্ক নেই, তারা কীভাবে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়। সেজন্য তারা ছাত্রত্বহীন ছাত্রদলের এ কমিটি বাতিল করার আহবান জানান।
এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নবনির্বাচিত সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
একই বিষয়ে কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ছাত্রত্ব আছে তবে সভাপতির নেই।’ পরে তার কাছে ছাত্রত্বের কাগজ পত্র চাইলে তিনি পাঠাবেন বলে জানান। কিন্তু পরে যোগাযোগ করা হলে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য— কবিরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হাফেজ মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে কবির হাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক তাদের দুজনেরই ছাত্রত্ব নেই।