রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলে তিন ঘণ্টা এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
গতকাল শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নিজের নিরাপত্তাও দাবি করেছেন। সামছুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
সামছুল ইসলাম জানান, নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে তিনি পরিবার চালান। ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা ব্যয়ভারও তিনি বহন করেন। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাকে রুমে ডেকে নিয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাসহ আরও কয়েকজন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তার কাছে থাকা বিভিন্ন জনের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন ভাস্কর সাহা। এ সব কথা সাংবাদিক কিংবা পুলিশকে জানালে বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
এদিকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বলেন, তাকে ফাঁসানোর জন্য এই অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি কারো কাছে চাঁদা দাবি করেননি। এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করেননি।
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমি এ বিষয়ে মাত্র অবগত হলাম। খোঁজ নিচ্ছি, সত্যতা প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি। কোনো শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দেওয়া এক ধরনের অপরাধ। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাকে আপাতত মেডিক্যালে পাঠিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।
মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রকে নির্যাতনের বিষয়টি প্রক্টর অফিস থেকে জেনেছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে শুক্রবার রাত ১১ টায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস।