জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে “আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ২০২৫” আয়োজন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) একমাত্র সাহিত্য সংগঠন শব্দকুটির। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজনের সভাপতি ছিলেন শব্দকুটিরের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আফিয়া আবিদা ইশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন শব্দকুটিরের উপদেষ্টা আবদুল করিম ও ফারিয়ান তাহরীম। অতিথি আলোচক হিসেবে “নজরুলের স্বাতন্ত্র্য” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক, কবি ও প্রাবন্ধিক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিকা পারভীন তামান্না ও মুঞ্জু রানী দাস।
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল তার বক্তব্যে কবি নজরুলের জীবন ও কর্মকে বর্তমান প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের শুধু সাহিত্যিক আনন্দই দেননি, দিয়েছেন প্রেরণা, দিয়েছেন সংগ্রামের সাহস। তিনি ছিলেন সাম্য, মানবতা ও স্বাধীনতার কবি। তার কবিতা ও গান আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয় যে কোনো অন্যায়, অসাম্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। কবিতা শুধু কাব্যের জন্য নয়, কবিতা মানুষের মুক্তির জন্যও। তাই আমরা যখন কবিতা পড়ি বা আবৃত্তি করি, তখন আমরা কেবল শব্দ উচ্চারণ করি না, আমরা সংগ্রামের শক্তিকে আহ্বান করি।”
তিনি আরো বলেনন, “বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে নজরুলের কবিতা ও গান ছিল মানুষের অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস। স্বাধীনতার প্রতিটি আন্দোলনে কবি তার কলম, তার সুর, তার কণ্ঠ দিয়ে মানুষকে জাগ্রত করেছেন। তিনি শুধু একজন কবি নন, তিনি ছিলেন আন্দোলনের প্রাণ, তিনি ছিলেন বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর। এমন মহান কবিকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মও সাহস, সত্য ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে যাবে।”
অতিথি আলোচক গাজী গিয়াস উদ্দিন তার প্রবন্ধে নজরুলের কৃতিত্ব, প্রেম ও দ্রোহের দিকগুলো তুলে ধরেন এবং গভীর শ্রদ্ধায় তাকে স্মরণ করেন।
শব্দকুটিরের সাধারণ সম্পাদক মুজতবা ফয়সাল নাঈম বলেন, “নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের সাহিত্যচর্চায় উৎসাহিত করার ধারাবাহিকতায় আমরা এই আয়োজন করেছি। প্রতিযোগীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে এমন আয়োজন করা হবে।”
আয়োজনের সভাপতি অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার প্রতিযোগীদের স্বাগত জানান এবং সকল অংশগ্রহণকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় তিনটি ক্যাটাগরিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মোট ৩৫ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। শেষে প্রতিটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।