কাতারের দোহায় নতুন করে শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতির আলোচনা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরাইল ও হামাস-উভয়পক্ষই । কিন্তু যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।
শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, দোহায় হামাস প্রতিনিধিদল ‘জিম্মি চুক্তির বিষয়ে’ আলোচনায় ফিরে এসেছে।
কাটজের মতে, ইসরাইল কোনও শর্ত ছাড়াই আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মিডিয়া উপদেষ্টা তাহের আল-নোনো সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানান, কোনো শর্ত ছাড়াই গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন দফা নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
এছাড়া তিনি বলেন, হামাসের প্রতিনিধিদল তাদের অবস্থান, যুদ্ধ বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা, বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সাহায্য এবং গাজার জনগণের সমস্ত চাহিদা পূরণের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।
এদিকে, কাতারের দোহায় যখন নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হয়েছে তখন গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। উপত্যকাটির একটি চিকিৎসা সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, শনিবার ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, তারা গাজাজুড়ে হামাসের ওপর আক্রমণ তীব্রতর করছে এবং ‘প্রচণ্ড চাপ’ প্রয়োগ করছে। জিম্মিদের ফেরানো এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে পুরোপুরি ভেঙে না ফেলা পর্যন্ত তারা থামবে না।
এছাড়া কাটজ বলেছেন, ‘অপারেশন গিডিয়ন রথ’ প্রচণ্ড শক্তির সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।
গত তিন দিনে গাজায় ইসরাইলি হামলা বৃদ্ধির ফলে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই উত্তর গাজার, যার মধ্যে রয়েছে বেইত লাহিয়া এবং জাবালিয়া।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ২০ হাজার।
দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইল। কিন্তু দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের অভিযান শুরু করে দখলদার বাহিনী। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত প্রায় দুই মাসে নিহত হয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি।