৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে অনেকটাই দূরে সরে যান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকর্মীরা। এরপর সবার আগে গ্রেফতার হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
একসঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগার জীবনেও একই ছাদের নিচে আছেন সালমান ও আনিসুল। এই দুই প্রভাবশালী নেতা কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। দুজনে একই ভবনে থাকলেও তাদের কক্ষ আলাদা। অবশ্য তাদের দেখা হয় প্রতিনিয়ত।
কারাগার থেকে একই প্রিজনভ্যানে ঢাকার আদালতে আনা হয় সালমান ও আনিসুলকে। আদালতের শুনানি শেষে আবার একই প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সালমান ও আনিসুল কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চম্পাকলি ভবনে আছেন। এই ভবনে আরও আছেন সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সচিব জাহাঙ্গীর আলম, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মহিবুল হক ও নজিবুর রহমান।
কারাগারে আনিসুলের সময় কাটে পত্রিকা ও ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ে। পাশাপাশি তিনি আইনের বই পড়েন। কোনো আত্মীয় দেশে না থাকায় ১৫ দিন পরপর কারাগারের পক্ষ থেকে সুযোগ পেলেও একাকী সময় কাটে তার। একই অবস্থা সালমান এফ রহমানের। তার আইনজীবী এক গণমাধ্যমে জানান, তিনিই তার মক্কেলের সঙ্গে কারাগারে গিয়ে সাক্ষাৎ করে আসেন। তারও কোনো নিকটাত্মীয় বর্তমানে দেশে নেই। কারাগারে তিনি পত্রিকা ও ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ে সময় কাটান।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালমান-আনিসুলসহ ৬০ জন প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী একই ভবন থাকেন। তারা অন্য বন্দীদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পান না। তবে তাদের নিজেদের মধ্যে রোজ দেখা হয়। কারাবিধি অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণির কারাবন্দীদের সঙ্গে তাঁদের নিকটাত্মীয়রা প্রতি পনেরো দিন পরপর সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন। নিকটাত্মীয়দের তালিকায় আছেন বন্দীর মা–বাবা, স্ত্রী-সন্তানেরা।
কারাবিধি অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণির কারাবন্দীদের জন্য মাছ-মাংস বরাদ্দ থাকে। তাদের বেশির ভাগ সময় কাটে পত্রিকা পড়ে। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দীদের গেল পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খেতে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া গত দুই ঈদে তাদের জন্য মাংস বরাদ্দ ছিল।