ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন ও ছাত্রশিবিরের নেতারা দাবি করেছেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, কুয়েটে ছাত্রদল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের কায়দায় নৃশংস হামলা চালিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদল নিজেদের রাজনৈতিক কবর রচনার পথেই অগ্রসর হলো।
প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশিদ লেখেন, কুয়েটে ছাত্রদল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ স্টাইলে যে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট। ৬ মাস আগের ইতিহাসই তারা ভুলে গেছে। ছাত্রদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আরেকটা ছাত্রলীগ হয়ে ওঠার যে কার্যক্রম ছাত্রদল শুরু করলো, এইটা তাদের পতনের শুরু হিসেবে দেখার বিকল্প নাই।
বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম লেখেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হয়েছে। তাই ক্যাম্পাসে নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েমের চিন্তা বোকামি ছাড়া কিছুই না। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান, কুয়েটে সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সকল সন্ত্রাসীদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেওয়ার এখনই সময়।
সংগঠনটির প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম ফেসবুক পোস্টে জানান, আমার ভাইবোনদের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় রক্ত ঝরালো ছাত্রদল। কুয়েটে ছাত্রদলের সংঘবদ্ধ হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ছাত্রজনতা আবার রুখে দাঁড়াও। নব্য ফ্যাসিজমের সম্ভাবনাকে গুড়িয়ে দাও। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে দখলদারিত্বের রাজনীতির কিছুতেই প্রশ্রয় আশ্রয় দেওয়া হবে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে কুয়েটকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এসময় তারা স্লোগান দেয়, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’ ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ বলে। স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে।
পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রদের দুই পক্ষের মধ্যে ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে বলে একটি সূত্র জানা গেছে।