উপাচার্য পদত্যাগের একদফা দাবিতে এ মূহূর্তে উত্তাল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(কুয়েট) ক্যাম্পাস। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবির আন্দোলনে হামলা এবং সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটকে সহানুভূতির সঙ্গে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে এনে দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এক বিবৃতিতে কুয়েট প্রশাসনের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে ছাত্রদলের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে ছাত্রলীগ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রমাগত মব কালচার তৈরি করে যে ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করেছিল। সেই পথ পরিহার করে সকলকে সুস্থ মতপ্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া, সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কাঠামোর উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক চর্চার অধিকার, পারস্পরিক সহাবস্থান, মানসম্মত আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থাসহ শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যাশিত সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
মূলত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার সূত্রপাত ঘটে, সেইদিন কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন, যেখানে অস্ত্র হাতে হামলায় সরাসরি জড়িত বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতার ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়।
এর মধ্যে আবার গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি। এ মুহূর্তে ভিসিবিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, বর্তমান উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।