খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চলমান সংকটের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী অবশেষে পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুয়েটের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই কুয়েটে উপাচার্য পদে থাকা ড. হযরত আলীর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন জানান, শিক্ষক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে এবং সংকট নিরসনে তার পদত্যাগ দাবি করেছে।
শুধু শিক্ষক সমিতিই নয়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত ব্যানারে বৃহত্তর কর্মসূচি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুয়েটের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে তারা বলেন, ড. হযরত আলী কুয়েটের পরিবেশ স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হয়েছেন। একজন যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থবিরতা থেকে মুক্ত করার দাবি জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এই অস্থিরতার শুরু গত এপ্রিল থেকেই। ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস কে শরীফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। এরপর ১ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ ড. হযরত আলীর উপর আস্থা রাখতে পারেনি। তার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। পরিস্থিতি দ্রুত এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, সমিতি থেকে আনুষ্ঠানিক অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং আন্দোলন জোরালো হয়।
অবশেষে সেই চাপের মুখেই দায়িত্ব ছাড়লেন ড. হযরত আলী। এখন কুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নতুন একজন গ্রহণযোগ্য এবং দক্ষ উপাচার্যের নিয়োগ প্রত্যাশা করছেন, যিনি সংকট নিরসন করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারবেন।